(SEO) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কত প্রকার
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, আধুনিক প্রচার এর ১টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ
ব্যপার যেটির দ্বারা যেকোন ওয়েব পেজ শত শত কিওয়ার্ডের জন্যে সার্চ ইঞ্জিনে ঠাঁই
নিয়ে থাকে যাকে আমরা ইংরেজিতে RANK বলে থাকি।
আজকে আমরা এসইও কি ও কেন করা হয়, সাথে সঙ্গে এসইও কেমন করে করা হয়ে যায় আর কেনই
বা আপনি এসইও শিখবেন, এসব জরুরী ব্যপার নিয়ে আলোচনা করবো। কথা না বাড়িয়ে চলুন
শুরু করা যাক।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি, Seo কিভাবে করব, এস ই ও শিখতে কত দিন লাগে, এসইও
করে আয়, Seo এর কাজ কি, Sem কি, মোবাইল দিয়ে এসইও, এসইও শিখুন,
Seo কি?
এসইও এর পূর্ণরূপ হলো “সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন”। সহজ কথায় আমরা যখন গুগল কিংবা
ভিন্ন যেকোন সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু লিখে সার্চ দিই, সেই সময় গুগল পক্ষান্তরে ঐ
সার্চ ইঞ্জিন কতগুলো ফলাফল দেখায়।
সেখান থেকে আমরা আমাদের পছন্দমত ইউআএল-এ ক্লিক করে আমার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটে
ভিজিট করে আমাদের প্রয়োজন তথ্য খুঁজে পাই। আর যেই কারণে গুগল কিংবা কোন সার্চ
ইঞ্জিন ওই রেজাল্টগুলো দেখায়, সেই কারণ পক্ষান্তরে পদ্ধতিকে হয়ে যায় সার্চ ইঞ্জিন
অপটিমাইজেশন।
কি জন্য SEO করা হয়
আমরা স্বাভাবিকভাবে আমাদের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে RANK করানোর জন্যে এসইও করি।
এসইও করার মাধ্যমে আমরা সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফল পেজের শুরুতে থাকার চেষ্টা করি।
রিজন ব্যক্তি যখন কোনকিছু নিয়ে সার্চ দেয় তখন ফলাফল পেজের প্রথমে যারা থাকে তাদের
লিংকেই ক্লিক করে।
একটি নমুনা দিলে বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে যাবে
মনে করুন, আপনার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি নারীদের থ্রি-পিস
কাপড় বিক্রি করেন। সম্প্রতি আপনি অবশ্যই চাইবেন যে গুগলে কেউ যখন নারীদের
থ্রি-পিস লিখে সার্চ দিবে সেই সময় যেন গুগলে আপনার ওয়েবসাইটকেই প্রথমে দেখায়।
তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকে ক্রেতারা এসে আপনার পণ্যটি কিনবে।
এখন এইযে পুরো প্রক্রিয়া যাহার দ্বারা আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল
“নারীদের থ্রি-পিস” এ কিওয়ার্ডের জন্যে দেখাবে সেটাই আমরা আধুনিক প্রচার
এর ভাষায় এসইও বলা হয়ে থাকে থাকি। বর্তমান তো আপনি বুঝতে পারছেন, যে কিসের জন্য
এসইও করা হয়?
seo কত প্রকার ও কি কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভাষায় এসইও বিভিন্ন ধরনের থেকে পারে। কিন্তু মৌলিক
প্রকারগুলো আমরা আজকে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
- টেকনিক্যাল এসইও
- অন-পেজ এসইও
- কন্টেন্ট এসইও
- অফ-পেজ এসইও
- লোকাল এসইও
- মোবাইল এসইও
- ই-কমার্স এসইও
White Hat এবং Black Hat এসইও কি?
বহুদর্শী এসইও এক্সপার্টরা এসইওকে মূলত দুই ভাগে অংশ করেছেন। তবে যদিও এই দুই
ভাগের একটি আজকাল অনেকক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে। কিন্তু অন্য কোনো আজকাল সময়ের
সাথে সমৃদ্ধ কৌশলের সঙ্গে উদ্ভাবন করা হয়েছে। আসলে মূলকথা হচ্ছে, সার্চ ইঞ্জিন
তার RANKING এলগোরিদমে অনেক বদল করেছে যাহার ফলে আজকাল যেকোন কিওয়ার্ডের জন্যে
RANK করা দৃঢ় হয়ে পড়েছে। আর সেই কথা মাথায় রেখেই নিউ নিউ প্রক্রিয়ার দ্বারা
এসইওকে দুইটি আরেক অংশে ভাগ করা হয়েছে। কথা না বৃদ্ধি করিয়ে আসুন আমরা ওই দুই
ধরনের এসইও সম্পর্কে জেনে নেই।
হোয়াইট হ্যাট এসইও কি
হোয়াইট হ্যাট এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সেই সকল পদ্ধতি যেগুলো সার্চ
ইঞ্জিনের নির্দেশনা এবং নিয়ম অনুসরণ করে করা হয়। আর এ উপায়ে কাজ করলে
স্বাভাবিকভাবে ভাল RANKING পাওয়া যায়। আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতি মেনে
আপনার ওয়েবসাইটটিকে অপটিমাইজ করেন তাহলে আপনি সার্চ ইঞ্জিন হতে ভালো ট্রাফিক
পাবেন বা পরিদর্শক বাড়াতে পারবেন।
ব্ল্যাকহ্যাট এসইও কি
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও মূলত সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতি ভঙ্গ করে করা হয়। সার্চ ইঞ্জিনে
তাড়াতাড়ি RANK করার জন্যে অনেকেই কৃত্রিম ভাবে লিংক ভবন করে। মানে হচ্ছে, নানারকম
সফটওয়্যার ইউজ করে ব্যাকলিংক সৃষ্টি করে। মানুষ এটার প্রতি আগ্রহী হয়ে যায় কারণ
হচ্ছে, এ ধরনের সফটওয়্যারগুলোর মাধ্যমে হাজার হাজার লিংক সৃষ্টি করা যায় ভীষণ কম
টাইম ব্যয় করে। আর এ বহু ইউআরএল ক্রিয়েট করে RANK করার জন্যেই ব্যক্তি এ
ব্ল্যাকহ্যাট এসইও করে থাকে।
তবে যদি সার্চ ইঞ্জিন কোনভাবে এইসব লিংকগুলোর ফুটপ্রিন্ট ধরে ফেলে তাহলে আপনার
ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিন বাতিল করে দিবে। আর সার্চ ইঞ্জিনের প্রযুক্তি বর্তমান
অনেক উন্নত, যা প্রচুর সহজেই এই ধরনের ওয়েবসাইটগুলোকে প্রচুর সহজেই বাতিল করে
দেয়। আর একবার তা হলে ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনে পুনরায় RANK করানো খুবই দৃঢ় হয়ে
যায়, অনেকক্ষেত্রে তা পসিবল হয় না।
কি জন্য seo শিখবেন?
এসইও শেখা কিশের জন্য জরুরী? এটা ১টি কঠোর প্রশ্ন। প্রকৃতপক্ষে আপনি কেন এসইও
শিখবেন সেটি কিছুসংখ্যক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হন তাহলে
আপনার এসইও শেখার রিজন থেকে পারে, আপনার ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটে পরিদর্শক নিয়ে প্রবল
বৃষ্টিপাত জন্যে।
আবার আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটার সংখ্যায় আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলেও আপনার
জন্যে এসইও শেখাটা প্রচুর জরুরী। কারণ এসইও শেখা ছাড়া আপনি কোনভাবেই
ক্লায়েন্টদেরকে মডার্ন মার্কেটিং পরিসেবা ঠিকভাবে দেওয়ার জন্য পারবেন না। আসুন
আমরা বিষয়টি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করি।
একজন ব্যবসায়ী কিসের জন্য এসইও শিখবেন?
ধরুন আপনার ১টি ব্যবসা ইন্সটিটিউট আছে যেখানে আপনি অনেক ভাল ভাল পণ্য অথবা
সার্ভিস প্রদান করেন। সাম্প্রতিক সময় অনুযায়ী যদি আপনি আপনার ব্যবসাকে অনলাইনে
সুন্দরভাবে পরিবেশন করতে না পারেন তাহলে আপনার ক্রেতাগণ কোনভাবেই আপনার পণ্য বা
সার্ভিস সম্মন্ধে জানতে পারবে না।
এখন এ এসইও শিখে আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটিকে ভালভাবে সার্চ ইঞ্জিনে RANKING এর
জন্যে অপটিমাইজ করতে পারেন তাহলে আপনার পণ্য বা সেবার বিক্রি অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
ঘুড়ি লার্নিং এই এসইও কোর্স রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি পর্যাপ্ত ভাল এসইও শিখতে
পারবেন।
একজন মার্কেটার কিসের জন্য এসইও শিখবেন?
এখন আসা যাক আরেক একটি উদাহরণে। যদি কেউ মডার্ন মার্কেটার হতে চান অথবা আধুনিক
প্রচার সেবা বিক্রি করতে চান তাহলে উনি কি জন্য এসইও শিখবেন?
বিষয়টি আসলে খুবই সহজ, আপনি যদি আপনার এসইও দক্ষতা কর্তৃক ভিন্ন কোন ব্যক্তির
ওয়েবসাইটকে RANK করতে হলে চান তাহলে আপনাকে আগে এসইও শিখতে হবে ও সেটি খুবই ভাল
করেই শিখতে হবে। তা না হলে আপনি কোনভাবেই আপনার কাস্টমারকে ভাল সার্ভিস প্রদান
করতে পারবেন না।
কেননা কাস্টমার সময়ই চাইবেন তার সাইট সার্চ ইঞ্জিনে ভাল RANK করুক আর তার
ওয়েবসাইটে প্রচুর পর্যাপ্ত ট্রাফিক আসুক। কারণ, পরিদর্শক যত বহু হবে, পরিচিতি আর
প্রসারও তত বেশি হবে। আর এ প্রসারের মাধ্যমে তার পণ্যের বিক্রিও অনেক বেড়ে যাবে।
আর পণ্যের অধিক বিক্রি মানেই হলো অধিক মুনাফা অর্জন করা।
আর আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটার পরিমাণে যদি এ সেবাটি ভালভাবে দেওয়ার জন্য পারেন
তাহলে আপনার ক্রেতারাও আপনাকে ভাল টাকা-পয়সা প্রদান করবে সেবার দাম হিসাবে। অনেক
আধুনিক মার্কেটার রয়েছে যারা শুধু ক্লায়েন্ট পরিসেবা কর্তৃক প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ
টাকা রোজগার করছে এ একবিংশ শতাব্দীতে।
একজন ব্যবসায়ীর নজর থেকে এসইও আর একজন আধুনিক মার্কেটারের নজরে এসইও সম্পুর্ণ
অন্য হতে পারে। কারণ তাদের দুইজনের লক্ষ্য ভিন্ন। কিন্তু আপনি যদি নির্ভুলভাবে
এসইও শিখতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই এই নৈপুন্যতা কর্তৃক আপনি আপনার টার্গেট সফলভাবে
সাধন করতে পারবেন।
কেমন করে seo করবেন?
কেমন করে এসইও করা যায় বা আপনি যদি এসইও করতে চান তাহলে কিভাবে তা করবেন? এ
প্রশ্নের জবাব আসলে ঈষৎ কথায় দেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আপনাকে একটা সার্বিক দেয়ার
ট্রাই করছি অল্প কথায়। আসুন শুরু করি, এসইও আসলে দুই ধরনের হয়ে থাকে, অনপেজ এসইও
এবং অফপেজ এসইও।
অন-পেজ এসইও
অনপেজ এসইও মূলত সাইটের মধ্যে করা হয়ে যায় যেমন কোন একটা টপিকে একটি আর্টিকেল
লিখে সেই আর্টিকেলটিকে এসইও এর নানারকম ব্যপার প্রয়োগ করে প্রস্তুত করা হয়।
যেমন, ইউআরএল, টাইটেল, এইচ ১, সাব হেডিং, বডি কন্টেন্ট, ইন্টারনাল লিংকিং, মেটা
টাইটেল, মেটা ডেস্ক্রিপশন ইত্যাদি। এ অপটিমাইজেশনগুলো আপনি যত দক্ষতার সাথে করতে
পারবেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্যে তত ভাল RANKING পাবেন।
এছাড়া ইকমার্স ওয়েবসাইটে, বিভিন্ন প্রোডাক্ট পেজ অপটিমাইজেশন করতে হয়ে যায় যাতে
ওই প্রোডাক্টটি সার্চ ইঞ্জিনে RANK করতে পারে। এক্ষেত্রেও ওই প্রোডাক্ট পেজের
টাইটেল, প্রোডাক্টের টাইটেল, প্রোডাক্টের ডেস্ক্রিপশন, মেটা টাইটেল, মেটা
ডেসক্রিপশন ইত্যাদি বিষয়গুলো খুবই ভালভাবে করা হয়।
অফ-পেজ এসইও
অফ-পেজ এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সেইসব প্রয়োগ, যেগুলো ওয়েবসাইটের
বাইরে করা হয়। যেমন, সামাজিক শেয়ার, ইউআরএল বিল্ডিং, সাইটেশন বিল্ডিং ইত্যাদি।
এছাড়াও ফাউন্ডেশন ইউআরএল ভবন যেমন প্রোফাইল তৈরি, ডিরেক্টরি সাবমিশন, ফোরাম
ব্যকলিংক ভবন ইত্যাদি।
মানে হচ্ছে, কোন মানুষ যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর হয়ে এসে আপনার কোন পেজ পড়ে আর
সেটাকে আরেক জায়গায় মেনশন করে তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার একটি ব্যকলিংক সৃষ্টি
হয়ে গেল। আরো সহজে বলতে গেলে, আপনার ওয়েবসাইটের ইউআরএল বা ইউআরএল অন্য কোন
ওয়েবসাইটে শেয়ার করার মানেই হচ্ছে লিংক বিল্ডিং।
উপসংহার
পরিশেষে যায় যে, আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি ভালভাবে পড়ে থাকেন তাহলে এসইও কি আর
এর প্রয়োজনীয়তা কি, এই সম্মন্ধে জানতে পেরেছেন।
আমরা আসলে চেষ্টা করেছি সহজে আপনাদের সবাইকে বুঝাতে যে, এই একবিংশ শতাব্দিতে
কেমনে ব্যক্তি ইন্টারনেটে পণ্য ক্রয় করে।
আবার যেকোন তথ্যের জন্যেও ইন্টারনেটেই যায়। রিজন অনলাইনে সবকিছুই পাওয়া যায়, আর এ
খুঁজে পাওয়ার জন্যে সার্চ ইঞ্জিন নামের ১টি অনলাইন মেশিন ইউজ করা হয়।
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের ১ম সারিতে দেখতে চান, তবে আপনার
টার্গেটেড কিওয়ার্ডের জন্যে আপনার সাইটের পেজকে অপটিমাইজ করতে হবে। আর আপনি যদি
ভালভাবে এসইও শিখতে পারেন তাহলে আপনি এ শিল্পে পর্যাপ্ত দূর যেতে পারবেন ।