Infoইসলাম

মৃত্যুর পর ফেরেশতারা লাশের সাথে কি করে । মৃত্যুর পর আত্মা কোথায় যায় । Where the human soul goes after death

মৃত্যুর পর ফেরেশতারা লাশের সাথে কি করে । মৃত্যুর পর আত্মা কোথায় যায় । Where the human soul goes after death
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ… সুপ্রিয় ভিউয়ার আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল
আলামিনের অশেষ মেহেরবানী ও দয়ায় আপনারা সবাই ভালো আছেন ।
একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ এর একজন সাহাবী মারা গেলেন, তখন মোহাম্মদ সাঃ উনার জানাজা
পড়ালেন । তারপর একদল সাহাবী যখন মৃতদেহ কবর দেওয়ার জন্য কবরস্থানে নিয়ে গেলেন ।
সবার সাথে আমাদের নবীজি সাঃ হেঁটে আসলেন । তখন দুই জন সাহাবীর কবর খুড়তে শুরু
করলেন । সবাই মৃতদেহ কে ঘিরে বসে আছেন । পিনপন নীরবতা । কবর খনন শেষ না হয়া
পর্যন্ত সবাই অপেক্ষা করছেন ।
তখন চুপচাপ নিরব শান্ত একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো । রাসূলুল্লাহ সাঃ তখন পিনপন
নীরবতা ভেঙে গভীর মনোযোগ দিয়ে কবর খুড়া দেখছিলেন । একটু পর তিনি সবার দিকে তাকিয়ে
বললেন, তোমরা কি জানো মানুষের মৃত্যুর পর আত্মার কি হয়?
সবাই তখন খুব আগ্রহের সাথে রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূল আল্লাহ আপনি
বলে দিন আমরা তো জানি না । নবীজি তখন একটু চুপ থাকলেন এবং সবাই ওনার কাছে এসে
ঘিরে বসলেন । মৃত্যুর পর আত্মার কি হয়? এই তথ্য তাদের জানা ছিল না ।
আজ তারা এই তথ্য প্রিয় রাসূল সাঃ এর মুখ থেকেক শুনতে পাবে । কত বড় সৌভাগ্য তাদের
প্রিয় ভিউয়ার আজ আপনারাও শুনতে পাবেন । রাসুল সাঃ মৃত আত্মার বিষয়ে কি বলেছিন ।
মৃত্যুর পর কি হয় আত্মার ।
শোনার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে রাসূল সাঃ এর চারপাশ ঘিরে বসলেন । তিনি একবার কবরের
দিকে তাকিয়ে মাথাটা তুলে আকাশের দিকে তাকালেন । তারপর তিনি গল্পের মত করে বলতে
শুরু করলেন, তিনি বললেন শুনোঃ-
যখন মানুষ একেবারে মৃত্যুশয্যায়, তখন সে মানুষ ফেরেশতাকে দেখে ভয় পেয়ে যায় ।
কিন্তু যে বিশ্বাসী ও ভালো মানুষ তাকে মৃত্যুর ফেরেস্তা হাসিমুখে সালাম দেয় ।
তাকে অভয় দেয় এবং মাথার পাশে এসে তা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় এবং ধীরে ও যত্ন করে
তাঁর পাশে বসে । তারপর মৃতপ্রায় মানুষটির দিকে তাকিয়ে বলে, হে পবিত্র আত্মা তুমি
তোমার পালনকর্তার ক্ষমা ও ভালোবাসা গ্রহন করো এবং এই দেহটি থেকে বের হয়ে আসো ।
মুমিনের আত্মা যখন বের হয়ে আসে তখন সে কোন রকম ব্যথা ও বেদনা অনুভব করে না ।
See also  (SEO) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কত প্রকার
রাসূল সাঃ তখন একটু ভাল করে উদাহরন দিয়ে বললেন, উদাহরন হিসাবে মনে করো, একটি
পানির পাত্র কানার কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর উপর থেকে এক ফোঁটা পানি যেমন
নিঃশব্দে নিচে নেমে আসে, ঠিক তেমনি নীরবে ও কষ্ট ছাড়াই আত্মাটির তাঁর দেহ থেকে
খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে বের হয়ে আসে ।
সেই সময় দুজন ফেরেস্তা বেহেস্ত থেকে বেহেস্তি সুগন্ধি মাখানো একটি নরম সুতির সাদা
চাদর নিয়ে আসেন । এবং সে আত্মাকে সাদা চাদরে আবৃত করে আকাশের দিকে নিয়ে যান ।
তারা যখন আকাশে পৌছান তখন অন্য ফেরেশতা সে আত্মা টিকে দেখার জন্য এগিয়ে আসেন ।
কাছে এসে সবাই বলেন সুবাহানল্লাহ । কত সুন্দর এবং কি সুন্দর ঘ্রান । তারপর সবাই
জানতে চায় এই আত্মাটি কার?
উত্তরে আত্মা বহনকারী ফেরেশতা বলেন উনি অমুকের সন্তান অমুক । বাকি ফেরেশতারা তখন
আত্মা টিকে সালাম দেয় । তারপর তারা জিজ্ঞেস করেন যে উনি কি করেছেন উনার আত্মার এত
সুঘ্রান কেন?
আত্মা বহনকারী ফেরেশতাগণ তখন বলে উঠেন, আমরা শুনেছি মানুষজন বলাবলি করছে উনি একজন
ভালো মানুষ ছিলেন । আল্লাহ তায়ালার একজন ভালো বান্দা ছিলেন তিনি, তিনি অনেক দয়ালু
। মানুষের অনেক উপকার করেছেন সে । এতোটুকু বলার পর রাসূল সাঃ একটু থামলেন ।
তারপর ভালভাবে সবার দিকে একটু দৃষ্টি দিয়ে ওনার কন্ঠটি একটু বাড়িয়ে বললেনঃ এই
কারণে বলছি সাবধান তোমরা কিন্তু কখই মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করবে না । কিন্তু
কখনো মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে সাথে সাথে তাওবার করে নিবে এবং ব্যাক্তির
কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে ।
প্রিয় দর্শক ফেরেস্তারা এই কথা শুনা মাত্র আত্মা বহনকারী ফেরেস্তারাও আকাশে গিয়ে
এক ফেরেশতা অন্য ফেরেস্তাদের কানে কানে এই কথা গুলো বলে বেড়াবে । এই কথাটি বলে
তিনি আবার একটু চুপ করলেন এবং কবরটির দিকে একটু দৃষ্টি দিলেন ।
See also  এইচএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ আবেদন করার নিয়ম ২০২৩ । HSC Board Challenge 2023
তারপর তিনি বলতে শুরু করলেনঃ এই সময় মানুষ যখন মৃতদেহটিকে কবর দেওয়ার জন্য
গোসল দিয়ে প্রস্তুত করবে, তখন আল্লাহ তায়ালা আত্মা বহনকারী ফেরেশতা দের কে বলবেন
যাও এখন তোমরা আবার এই আত্মাটিকে তাঁর শরিরে দিয়ে আসো ।
মানুষকে আমি মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি এবং তাঁর আত্মা টিকে আবারো তাঁর মাটির দেহে
মাটির সাথে মিশিয়ে দিবো । সময় হলে তাকে আমি আবার পুনরায় জীবন দিব । তারপর মৃত
ব্যাক্তিকে কবরে রেখে যাওয়ার পরে দুজন ফেরেশতা আসবেন । তাদের নাম মুনকার-নাকির ।
তারা তখন মৃতের সৃষ্টিকর্তা তাঁর ধর্ম ও নবী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন । মুনকার
নাকির চলে যাবার পর সেই মৃত আত্মাটি আবার অন্ধকার কবরে একাকি হয়ে যাবে । সে এক
ধরনের অজানা আশঙ্কায় অপেক্ষা করবে ।
সে কোথায় আছে এবং কি করবে এরূপ এক অনিশ্চয়তা এসে তাকে ঘিরে ধরবে । এমন সময় সে
দেখবে খুব সুন্দর একজন লোক তাঁর কবরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন । তাকে সেখার
পর আত্মা ডিভিশন মুগ্ধ হবে । এত মায়াবি এতো সুন্দর তাঁর চেহারা দে জিবনে কোন দিন
দেখেনি ।
আত্মাটি তখন জিজ্ঞেস করবে তুমি কে? সে লোকটি তখন বলবে । আমি তোমার জন্য অনেক বড়
একটি সুসংবাদ নিয়ে এসেছি । তুমি দুনিয়ার পরিক্ষায় উত্তির্ণ হয়েছ । আলহামদুলিল্লাহ
। তোমার জন্য আল্লাহ তাআলা জান্নাতের ব্যবস্থা করেছেন ।
তুমি কি সেটি একটু দেখতে চাও? একটু দেখতে চাও তুমি সেই জান্নাত, যা আসমান জমিন
থেকে বৃহৎ । আত্মাটি তখন ভীষণ খুশি হয়ে বলবে, অব্যশ্যই আমি তা দেখতে চাই । অব্যশই
আমি তা দেখতে চাই । আমাকে একটু জান্নাত দেখাও ।
লোকটি তখন বলবে, তোমার ডান দিকে তাকাও । আত্মাটি তখন ডানে তাকিয়ে দেখবে কবরের
দেয়ালটি সেখানে আর নেই । সেই দেওয়ালে দরজা দিয়ে অনেক দুর পর্যন্ত যতদূর দৃষ্টি
যায়, দৃষ্টির সীমা পেরিয়েও একটি একটি সুন্দর বেহেস্ত দেখা যাচ্ছে । বেহেস্তের সে
রূপ দেখে আত্মাটি অনেক মুগ্ধ ও প্রশান্তি লাভ করবে । এবং সেখানে যাওয়ার জন্য
অস্থির হয়ে যাবে ।
See also  ইউটিউবে কিভাবে ভিউ বাড়বে - ভিডিও ভাইরাল করার উপায়
লোকটি জিজ্ঞেস করবে, আমি সেখানে কখন যাব এবং কিভাবে যাব? লোকটি মৃদু হেসে বলবে,
যখন সময় হবে তখনই তুমি সেখানে যাবে, সেটি হবে ইয়াওমুল কেয়ামার পরে এবং তুমি
সেখানেই চিরস্থায়ী হবে ইনশাআল্লাহ । আপাতত শেষ দিবস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ।
ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, আমি তোমার সাথেই আছি, তোমাকে আমি সেদিন পর্যন্ত সঙ্গ
দিবো, যেইদিন পর্যন্ত না ইয়াওমুল কেয়ামা হবে । আত্মাটি তখন তাকে আবারো জিজ্ঞেস
করবে, কিন্তু তুমি কে?
তখন সে লোকটি বলবে, আমি তোমার এত দিনের নেক আমল । সুবাহানাল্লাহ । পৃথিবীতে তোমার
সকল ভাল কাজের ফলাফল আমি নিজেই । তুমি নাফেসর সাথে যুদ্ধ করে ভালো কাজ করেছো ।
তুমি খারাপ আচরণ করা প্রতিবেশির খারাপ আচরণ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজম করেছো ।
উঠতে বসতে ফিরতে প্রতিটি কাজ তুমি আল্লাহর জন্য করেছো ।
আর আমি জানি এতে তোমার কত কষ্ট হয়েছে । আমি তোমার সেই নেক আমল । আজ তুমি আমাকে
একজন সঙ্গির মতো করে দেখছ । আমাকে আল্লাহ তালা তোমার সঙ্গ দেওয়ার জন্যই এখানে
পাঠিয়েছে ।
এই কথাটি বলে লোকটি আত্মাটির ওপর খুব যত্নে হাত বুলিয়ে দিবেন এবং বলবেন, হে
পবিত্র আত্মা এখন তুমি শান্তিতে ঘুমাও নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নাও । এ কথা বলার পর
আত্মাটি এক নজরে বেহেশতের দিকে তাকিয়ে থাকবে ।
এবং এক সময়ে এই তাকানো অবস্থায় গভীর প্রশান্তিতে ঘুমিয়ে পড়বে । রাসুল সাঃ এতটুকু
বলার পরে আবার থামলেন । সাহাবীরা তো তখন গায়ের কাপড় চোখের পানিতে ভিজালেন এবং
বললেন, হে আমাদের রব আপনি আমাদের সকলের পবিত্র আত্মা হিসাবে কবুল ও মঞ্জুর করে
নিন । আমিন!