ইসলাম

সাপের কামড় থেকে বাঁচার দোয়া

সাপের কামড় থেকে বাঁচার দোয়া

সাপের দংশন হইতে নিরাপদ থাকার তদবীর

হযরত সৈয়দ আহমদ শহীদ ব্রেলভী সাহেবের মোজাররাবাত নামাক কিতাবে লিখিত হইয়াছে যে,
যদি কোন ব্যক্তি এই দোয়া একবার উচ্চারণ করে তবে এক বছরের মধ্য তাহাকে সাপে দংশন
করিবে না ।

উচ্চারণঃ ইয়া বিলাহ্‌ মুঈ সানুছ নাহ্‌ কাতি ।

এই দোয়া সুরিয়ানী ভাষার শব্দ । হযরত মূসা নবী (আঃ) এর সময় প্রথম সাপের
যাদু-মন্ত্র প্রসার লাভ করে । হাতের লাঠি দ্বারা সাপের যাদু-মন্ত্র নষ্ট করার
মাজেযা তাহার নবুয়তের বিশেষ নিদর্শন । সাপের শক্তি ও বিষ নষ্ট করার জন্য ঐ
জামানায় অনেকগুলি আয়াত ও ইসম নাযিল হইয়াছিল, ইহা তাহাদের অন্যতম । অনেকে ধারণা
করিয়া থাকেন যে, এই শব্দগুলি তৌরাতের অন্তর্ভুক্ত । ইহার সঠিক অর্থ ও তফসীর কেহই
অবগত নহেন, তবে ইহা সাপ হইতে নিরাপত্তার জন্য বহুকাল ধরিয়া পরীক্ষিত তদবীররূপে
ব্যবহার লাভ করিয়া আসিতেছে ইহার কার্যকারিতায় কোন সন্দেহ নাই ।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার পরীক্ষিত দোয়া

ফজর ও মাগরিবের সময় ৩ বার করিয়া এই আয়াত শরীফ পড়িলে সাপে দংশন করিবে না ।

আয়াত এইঃ 

সালামুন আলা নূহিন ফিল আলামীন (২৩ পারা, সূরা সাফফাত, ৭৯ আয়াত)

অর্থঃ সমস্ত জগতের প্রত্যেক দিকে, এই রব রহিয়াছে যে নূহ নবী (আঃ) এর উপর
শান্তি সালাম অবতীর্ণ হউক ।

এই আয়াতে নূহ নবী (আঃ) এর উপর মহাপ্লাবনের সময় আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহের কথা
উল্লেখ রহিয়াছে । আল্লাহ তায়ালা বলিয়াছেন যে, আমি ধর্মদ্রোহীদিগকে মহাপ্লাবনে
নিমজ্জিত কতিয়াছিলাম ও আমার দয়ার চিহ্নস্বরূপ নূহ নবী (আঃ) ও তাহার পরিজন
সাহাবাগণকে ভয়াবহ প্লাবন এবং তুফান হইতে রক্ষা করিয়াছিলাম । পৃথিবীতে একমাত্র
তাহার বংশধরগণই অবশিষ্ট ছিল, সেজন্য জগদ্বা‌সীগণ এখনও আমার প্রিয় নূহ নবীর (আঃ)
কথা স্মরণ করিয়া তাহাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ করিয়া থাকে । আমার অন্যান্য ইমানদার
সেবকগণও এইরূপভাবে ইহ-পরকালে আমার অনুগ্রহ লাভ করিবে । এই আয়াতটি হযরত নূহ নবী
(আঃ) এর প্রতি একটি দরূদ বিশেষ ইহার বরকতে তাহাঁর দোয়া ও আল্লাহর রহমত লাভ হয় ।
ফলে পাঠকারী সাপ দংশনের বিপদ হইতে নিরাপদে থাকে ।

See also  কোরবানির নিয়ম কানুন

সাপের বিষ নষ্টের পরিক্ষিত তদবীর

  • ক্বা‌লা আলক্বি‌হা ইয়া মূসা 
  • ফাআলক্বা‌হা ফাইযা হিয়া হাইয়্যাতুন তাস্‌আ
  • ক্বা‌লা খুযহা ওয়ালা তাখাফ্‌ সানুয়ীদুহা সীরাতাহাল উলা । (সূরা তা-হা, ১৯-২১
    আয়াত)
  • সালামিন আলা নূহিন ফিল আলামীন (সূরা সাফফাত, ৭৯আয়াত)
  • আফাগায়রা দীনিল্লাহে ইয়াব গুনা ওয়া লাহু আসলামা মান ফিস সামাওয়াতে ওয়াল আরদি
    তাওয়াও ওয়া কারহাও ওয়া ইলাইহি ইউরজাউন (সূরা আলে ইমরান, ৮৩ আয়াত)

এই আয়াতের ফজিলতঃ

১-৩ আয়াতে হযরত মূসা (আঃ) এর সাপ ধ্বংস করার মা’জেযা বর্ণিত হইয়াছে ।
৪র্থ আয়াতে হযরত নূহ নবী (আঃ) এর প্রতি তুফানের সময় আল্লাহর অনুগ্রহের বর্ণনা
রহিয়াছে ।
৫ম আয়াতের দ্বারা আল্লাহর শক্তিই সকল সৃষ্টির উপর প্রবল বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে ।
এই সকল কারণে এই আয়াতগুলির আমল দ্বারা আল্লাহ তায়ালার রহমত ও কুদরতের বর্ণনা হয়
বলিয়া উপরোক্ত ফজীলত লাভ হয় ।

ঘরে সাপ না থাকার তদবীর

যে ঘরে সাপ থাকে বলিয়া সন্দেহ হয়, সেই ঘরে শয়নকালে এই আয়াত পড়িলে সাপ কোন ক্ষতি
করিতে পারে না ।
আয়াত এইঃ 
সালামুন আলা ইলইয়াসীন । (২৩ পারা, সূরা সাফফাত, ১৩০ আয়াত)
ফজিলতঃ হযরত ইলিয়াস নবী (আঃ) হযরত ঈসা (আঃ) এর হাজার বছর পূর্বে জম্নগ্রহন
করিয়াছিলেন । সে কালে লোকেরা সূর্যের উপাসনা করিত । তিনি তাহাদিগকে আল্লাহর
এবাদতে ফিরাইয়া আনার জন্য অনেক চেষ্টা করেন, কিন্তু তাহারা হযরত ইলিয়াস (আঃ) এর
উপর নানা প্রকার নির্যাতন ও অমানুষিক অত্যাচার চালাইতে থাকে । তথাপি তিনি
প্রচারকার্য হইতে বিরত হন নাই । সেই জন্য আল্লাহ তাহাকে বিশ্বস্ত বলিয়া সম্বোধন
করিয়াছেন ও তাহাঁর প্রতি শান্তিবাণী প্রেরণ করিয়াছেন । এই আয়াতটি হযরত ইলিয়াস নবী
(আঃ) এর প্রতি দরূদ । এই দরুদ শরীফের বরকতে তাহাঁর দোয়া ও আল্লাহ তায়ালার রহমত
লাভ হয়, সেইজন্য পাঠকারী নিরাপত্তা লাভ করে ।
See also  সালাম দেওয়া ও নেওয়ার নিয়ম