Infoজমি-জমা

জমি ক্রয় করার সময় কয়টি বিষয় বিবেচনা করতে হয় এবং কি কি

জমি বিক্রি করতে কি কি কাগজ লাগে, নিরাপদে জমি কেনার উপায়, জমি কেনার আগে কি কি দেখতে হয়, জমি রেজিস্ট্রি করার নিয়ম, জমি বিক্রয় করার নিয়ম, জমি ক্রয়ের নিয়মাবলী, জমি রেজিস্ট্রি করতে কতদিন সময় লাগে, জমি কিনতে কি কি কাগজ লাগে, নিরাপদে জমি কেনার উপায়, জমি ক্রয়ের নিয়মাবলী, জমি ক্রয় করার সময় কয়টি বিষয় বিবেচনা করতে হয় এবং কি কি, খাস জমি কেনার নিয়ম, জমি কিনতে চাই, জমি রেজিস্ট্রি করার নিয়ম, জমি বিক্রয় করার নিয়ম, জমি বিক্রি করতে কি কি কাগজ লাগে, জমি ক্রয় করতে কি কি কাগজ লাগে, নিরাপদে জমি কেনার উপায়, জমি কেনার আগে কি কি দেখতে হয়, জমি ক্রয় বিক্রয় চুক্তিনামা,
জমি ক্রয় করার সময় যে কয়টি বিষয় বিবেচনা করতে হবে এবং কি কি তা আমি নিচে সুন্দর
করে লিখে দিয়েছি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখুন আপনার কাজে আসবে । 

Table of Contents

জমি কেনার আগে করণীয়

একটি জমি কিনতে আমাদেরকে কিছু জিনিসের উপর লক্ষ রাখতে হবে । এই বিষয় যদি আমরা
ভালো করে বুঝি ইনশাআল্লাহ আমরা জমি কিনে ঠকবো না কোন দিন ।

  • শান্তিপূর্ণ জমির দখল আছে কিনা
  • দেখানো জমি আর দলিল খতিয়ান ও ম্যাপ মোতাবেক জমি একই কিনা
  • জমির মালিকানা ঠিক আছে কিনা
  • জমির বিক্রেতার যোগ্যতা আছে কিনা

জমির শান্তিপূর্ণ দখল

আইনের ভাষায় দখল মালিকানার ৯০ ভাগ বলে একটি কথা প্রচলিত আছে। এটাই সত্য এটাই
বাস্তবতা। জমি কেনার আগে জমির আশে পাশে জমির মালিকের সাথে সরে জমিনে গিয়ে কথা
বললে বুঝতে পারবেন জমিতে মালিকের বাস্তব দখল আছে কিনা? কোন বিরোধ আছে কিনা।
প্রয়োজন হলে একাধিক বার গিয়ে দেখতে হবে তাহলে বাস্তব দখল বিষয় জানা যাবে।

দেখানো জমি আর দলিল খতিয়ান ও ম্যাপ মোতাবেক জমি একই কিনা ?

আপনি যে জমিটি ক্রয় করবেন, যেটি আপনি সরে জমিনে দেখলেন যদি জমিটি পছন্দ হয়
এবং ক্রয় করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনার উচিত হবে জমিটির দলিলে যে দাগ নাম্বার,
খতিয়ানে যে দাগ নাম্বার সে দাগ নাম্বারের যে মৌজা ম্যাপ সে হিসাবে এই জমিটি
কিনা আপনি যদি নকশা বুজেন তাহলে আপনি নিজেই বুজতে পারবেন। না পারলে এলাকার আমিন
দিয়ে জমিটির নকশা মোতাবেক ঠিক আছে কিনা দেখে নিন, সাথে জমিটি মেপে নকশা করে
নিন, কত ফিট বাই কত ফিট লম্বা ও চওড়া। যদি দলিল খতিয়ানে জমি বেশি থাকে এবং
নকশায় কম থাকে তাহলে নকশায় যতটুকু আছে ততটুকু নেয়াই ঝামেলামুক্ত।
নকশা মোতাবেক জমিটি ঠিক থাকে তবে আসুন এবার দলিল খতিয়ান আর ম্যাপের অন্য বিষয়
দেখি।

বিক্রেতার জমিতে মালিকানা স্বত্ব আছে কিনা? থাকলে এখনো তা বহাল আছে কিনা

এজন্য আমরা কিছু বিষয় জানবো প্রথমেই জমির দলিল
জমির বিক্রেতার কাছ থেকে জমির মালিকানার যাবতীয় দলিল খতিয়ান, দাখিলা বুঝে নিন
মানে যে দলিল বা কাগজের বলে সে জমিটি তার বলে দাবি করছে, এটি সাফকবলা, হেবা,
দান, উইল, অছিয়ত, বিনিময় বা নিলামপত্র বা আদালতের ডিক্রি হতে পারে। জমিটির
মালিকানার দলিল ছাড়াও আগের মালিকের দলিল মানে যার থেকে সে জমিটা পেল তার দলিল
যাকে আমরা বায়া দলিল বা পিট দলিল বলি। সেই বায়া দলিলগুলো বুজে নিন। মনে রাখবে
১৯০৮ সালের পর থেকে দলিল রেজিস্ট্রেশন শুরু হয় সম্পূর্ণরুপে। তাই এর পরের থেকে
দলিল পাবেন। দলিলে বিক্রেতার নাম, জমির দাগ নাম্বার, খতিয়ান নাম্বার এবং
একাধিক মালিক থাকলে হলে অযুতাংশ এবং শতাংশ হিসাবে থাকে। তাদের অংশের পরিমাণ
দেখে নিন কতটুকু। দলিলে সাধারণত একর এবং শতক হিসাব থাকে আর নতুন
See also  আজান দেওয়ার সঠিক নিয়ম এবং আজানের গুরুত্ব

ওয়ারিশ সনদ বা উত্তরাধিকার সনদ

পৈতৃকবা ওয়ারিশি জমি হলে ওয়ারিশ সনদ এবং একাধিক উত্তরাধিকারী থাকলে সবাই
বিক্রি না করলে তাদের নিজেদের মধ্যে আপোষ বণ্টননামা আছে কিনা তা জেনে নেবেন— না
থাকলে একটু সাবধান তাদের ওয়ারিশ আসলে কতজন? ফারায়েজ মোতাবেক অংশ ঠিক আছে
কিনা? তা জেনে নিতে হবে। আর অংশনামা বা বাটোয়ারা দলিল থাকলে তা বুঝে নিন এবং
সেই আপোষ বণ্টন অবশ্যই রেজিস্টিকৃত হতে হবে। মৌখিক অংশনামা গ্রহণযোগ্য নয়।

বাটোয়ারা দলিল

একাধিক ব্যক্তির নাম থাকলে দলিলে তারা সবাই বিক্রি না করলে তাদের মধ্যে বণ্টন
দলিল আছে কিনা জেনে নেবেন। বণ্টন দলিল অংশের বেশি বিক্রি হচ্ছে কিনা জেনে নিতে
হবে এবং পারলে অন্য শরিককে দলিলে সাক্ষী হিসাবে নিতে হবে যাতে সে আপনাকে যে
অংশে দখলে দেবে সে অংশ দাবি না করে পরে।

বন্দোবস্ত কৃত জমি হলে

লিজ বা ইজারা দলিলের টি বুঝে নিন। এবং লিজ দলিলের শর্তগুলো ভাল করে পড়ে নিতে
হবে। যদি জমি বিক্রির অনুমতি না থাকে বা অনুমতি নিতে জমি কিনার আগে বিক্রেতাকে
সেই অনুমতিপত্র নিতে বলতে হবে।

নাবালকের জমি বিক্রয় আইন

মুসলিম আইনে পিতা এবং দাদা নাবালকের জমি বিক্রি করতে পারা। তাই নাবালকের জমি
যদি এদের বাইরে অন্য কেউ বিক্রি করে তাহলে সেই নাবালক সাবালক হবার ৩ বছরের
মধ্যে জমি দাবি কতে পারবে। তাই এইরকম জমি হলে নাবালকের অভিভাবক নিযুক্তি এবং
সেই জমি বিক্রির জন্য আদালতের অনুমতিপত্র লাগবে, নাহলে নাবালকের জমি কেনা যাবে
না।

আদিবাসীর জমি কেনার আগে

সহকারী কমিশনার ভূমি থেকে জমি হস্তান্তরের অনুমতিপত্র নিতে হবে। কারণ SAT ACT
১৯৫০ আইনে এক আদিবাসী অন্য আদিবাসী ছাড়া বাইরের লোকের কাছে জমি হস্তান্তরে
বাধা নিষেধ আছে।

ওয়াকফ জমি বিক্রয় করার নিয়ম

আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ওয়াকফকৃত জমি হস্তান্তরযোগ্য না তাই কোন অবস্থায়
কেনা যাবে না।

জমির দলিল জীবনস্বত্ব হলে

জীবনস্বত্ব দলিলে প্রাপ্ত জমি হস্তান্তর করা যায় না, শুধু ভোগ করা যায় তাই এই
প্রকারের জমি কখনো কেনা যাবে না।

জমির মালিকনার দলিল সাব রেজিস্ট্রেশন অফিসে তল্লাশি

রেজিস্ট্রেশন মোতাবেক দলিল রেজিস্ট্রি না হলে তার কোম দাম নাই তাই যেকোন দলিল
সাব রেজিস্ট্রেশন অফিসে তল্লাশি দিয়ে বালামে দলিল-টি লেখা আছে কিনা দেখে নিতে
হবে। সাধারণত ৩০ বছরের তল্লাশি দিলে যাবতীয় কিছু জানা যায় যে জমির মালিক
গোপনে অন্য কাউকে জমি হস্তান্তর করেছে কিনা, বন্ধক বা বায়নামা করেছে কিনা ?
রেজিস্ট্রেশন আইনের ধারা ৫৭ মোতাবেক তল্লাশি নিজে গিয়েও দেয়া যায় বা দলিল
লেখকের মাধ্যমে অথবা তল্লাশি কারকের মাধ্যমে দেয়া যায়। দলিল রেজিস্ট্রেশনের ৩
বছরের মধ্যে হলে সাব-রেজিস্ট্রেশন অফিসে এর বেশি হলে জেলা রেকর্ড রুমে তল্লাশি
দিতে হবে। তবে অনেক সময় জেলা রেজিস্টারের অনুমতি ক্রমে পুরাতন দলিলের বালাম
সাব-রেজিস্ট্রেশন অফিসে রাখার অনুমতি আছে রেজিস্ট্রেশন ম্যানুয়াল ২০১৪ মোতাবেক

জমির খাজনার রশিদ বা দাখিলা

মালিকানার দলিল বা নিলাম বা আদলাতের ডিক্রি দিয়ে অবশ্যই নামাজারি থাকতে হবে
এবং সেই খতিয়ান দিয়ে খাজনা নেয়া হচ্ছে কিনা জেনে নিতে হবে, খাজানার রশিদ
যাকে দাখিলা বলে তা চেয়ে নিতে হবে। না থাকলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খতিয়ান নিয়ে
গিয়ে দেখতে হবে সেই জমির খাজনা দলিল যে মালিক সে বা তার উত্তরাধিকারী দিচ্ছে
কিনা, খাজনা বকেয়া আছে কিনা থাকলে কত ? বিক্রেতাকে সেই খাজনা অবশ্যিই পরিশোধ
করতে হবে মনে রাখবেন খাজানার রশিদ ছাড়া সাব রেজিস্টার দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন
না। আর যদি খাজনা না নেয়া হয় জেনে নিবেন কেন নেয়া হচ্ছে না? জমি কি নিলাম বা
সরকারি খাস হয়েছে কিনা? তহশিলদারকে বললে উনি সব জানিয়ে দিবেন। সাধারণত ভূমি
অফিসে ১নং বালামে খতিয়ান নাম্বার এবং ২ নং বালামে সেই খতিয়ান দিয়ে খাজনা
দেয়ার জন্য হোল্ডিং নাম্বার খোলা হয়। ২ নং রেজিস্টর দেখে যাবতীয় খাজনা
বিষয়ে জানা যায়।
See also  বোর্ড পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম

জমির খতিয়ান

সাধারণত ১৮৮৮ থেকে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় যার নাম সি এ, এস এ, আর এস এলাকা
ভেদে, তাই মালিকের কাছ থেকে জমির সর্বশেষ খতিয়ান যা খারিজ খতিয়ান এবং এই
রেকর্ডীয় খতিয়ান বুঝে নিতে হবে। না থাকলে দলিলে দেখেন সাবেক খতিয়ান এবং হাল
খতিয়ান লেখা আছে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান এবং এই খতিয়ান আসলেই সত্য কিনা যাচাই
করে নেন। এবং আগের খতিয়ানগুলোর নাম্বার জেনে নিন এবং রেকর্ডীয় মালিকদের নাম
জেনে নিন। চাইলে উপজেলা ভূমি অফিসে খতিয়ানের যাবতীয় মালিনা বিষয় তল্লাশি
দেয়া যায়। এবং এই খতিয়ান নাম্বার দিয়ে জেলা রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ানগুলো
উঠান।

জমির নকশা

যে জমিটি কিনতে চাচ্ছেন তার নকশা বুঝে নিন। মালিকের কাছে না থাকলে এলাকার
আমিনের কাছ থেকে নকশার ফোটকপি চেয়ে নিন। ম্যাপের বাইরে জমি থাকলে তা নিবেন না
দলিল এবং খতিয়ানে যাই থাকুক। পুরাতন এবং নতুন নকশা ভালো করে দেখে জমি আসলে
দলিল খতিয়ানে প্রদর্শিত দাগ নাম্বার হিসাবে ম্যাপ আছে কিনা আমিনের মাধ্যমে
যাচাই করে নিবেন। অনেক জমির দলিলে এবং যে দাগ জমির দখল অন্য দাগে থাকে।

জমির বাস্তব মালিকানা

দলিল হিসাবে দেখুন
  • জমির পরিমাণ
  • দাগ নাম্বার
  • হারাহারি অংশ

খতিয়ান হিসাবে দেখুন

  • জমির পরিমাণ
  • দাগ নাম্বার
  • জমির হিস্যা

ম্যাপ হিসাবে দেখুন

  • দাগ ছোট হলে জমির পরিমাণ
  • দখল মোতাবেক ম্যাপ ।

কিভাবে কাগজগুলো বিশ্লেষণ করবেন

জমির দলিল দেখুন
  • গ্রহীতার নামে এর সাথে বিক্রেতার নামের মিল আছে কিনা?
  • না থাকলে দলিলে লিখিত ব্যক্তির সাথে তার কি সম্পর্ক? উত্তারধিকারী হলে
    ওয়ারিশ সনদে দেখুন নাম মিলে কিনা?
  • যতটুকু জমি ক্রয় করবেন ততটুকু বা তার চেয়ে বেশি আছে কি?
  • একাধিক মালিক হলে হারাহারি অংশ ঠিক আছে কিনা?
  • দলিলে পূববর্তী দলিল নাম্বার বা খতিয়ান নাম্বার দেখে তার সাথে মূল
    দলিল মিলিয়ে নিতে হবে। মূল দলিলে যে আগের দলিল নাম্বার আছে তার সাথে
    আগের দলিলের মালিকের নাম, দাগ, জমির পরিমাণ ঠিক আছে কিনা তা দেখে নিতে
    হবে। একটি বায়া দলিল হতে পারে একাধিক বায়া দলিল হতে পারে। আমাদেরকে
    এভাবে সি এস রেকর্ডে এর মালিক পর্যন্ত যেতে হবে।

জমির খতিয়ান

  • দলিলে যে জমির দাগ নাম্বার আছে খতিয়ানে সেই দাগ আছে কিনা?
  • আপনি যতটুকু জমি কিনবেন সে পরিমাণ বা তার বেশি আছে কিনা?
  • জমির মালিকের নাম ঠিক আছে কিনা
  • খতিয়ানে একাধিক মালিকের হিস্যা ঠিক আছে কিনা?
  • নামজারি খতিয়ান হলে মন্তব্য কলামে আগত খতিয়ান নাম্বার দেখে বায়া
    খতিয়ান দেখুন ঠিক আছে কিনা। 
  • এভাবে সি এস খতিয়ান পর্যন্ত দেখতে হবে।

জমির নকশা

আপনি যে জমিটি কিনছেন সেটি যদি সম্পূর্ণ দাগ কেনেন তাহলে নকশাটি মেপে দেখেন
নকশায় কতটুকু জমি আছে? দলিল বা খতিয়ানে যদি নকশার বেশি জমি থাকে তা ক্রয়
করা যাবে না।
সড়ক এবং জনপদের জমির পাশে হলে-
প্রথম তাদের নকশা সংগ্রহ করে জেনে নিতে হবে তারা আসলে কতটুকু জমি
অধিগ্রহণ করেছে। কারণ রাস্তার পাশের অনেক জমি মানুষের দখলে থাকে কিন্তু
বাস্তবে তার মালিক সড়ক বিভাগ। প্রতিটি জেলায় অফিস আছে সেখান থেকে এই
নকশা নিতে পারেন।

দলিল খতিয়ানের সত্যতা যাচাই

খতিয়ানের সত্যতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এবং দলিলের সত্যতা উপজেলা সাব
রেজিস্ট্রি অফিসের বালাম তল্লাশি দিয়ে জানতে পারবেন।

দলিল জাল কিনা

দলিল যে প্রকারের হোক তা জানতে আপনাকে যেতে হবে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রেশন
অফিসে সেখানে দলিল নাম্বার আর তারিখ দিয়ে দলিলটি বালাম বই দেখতে হবে
আসলেই কি হাতের দলিলটি বালামে ‘লিখা আছে কিনা? জমির পরিমাণ ঠিক আছে কিনা?
যদি সেই দলিল নাম্বারে দলিলটি থাকে তবে তা জাল নয়।
See also  লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসা

দায় মুক্তি সনদ বা নির্দয়ী সনদ (NEC):

নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে আবেদন করে জমিটির বিগত ৩০বছরের হস্তান্তরের ইতিহাস
জেনে নিতে হবে, কারো জমিটির। কাছে বিক্রি বা দান বা হেবা বা ব্যাংকে লোন
আছে কিনা জমিটির ওপর। সবকিছু ঠিক থাকলে বায়নামা করুন ।

জমির বায়নামা

যখন কোন জমি আপনি যাচই-বাছাই করে সব কিছু সঠিক পাবেন তখন আপনার দায়িত্ব
হবে যত কম মূল্যে পারেন বায়নামা করা এবং বায়নামা অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন
করে নেয়া।

বায়নামা দলিল করার নিয়ম

বায়নাকৃত জমির দামের ওপর ভিত্তি করে তিন প্রকারের হতে পারে রেজিস্ট্রেশন
আইনের ধারা ৭৮ক মোতাবেকঃ-
  • দলিলে লিখিত জমির দাম ৫ লাখ টাকা হলে রেজিঃ খরচ ৫০০ টাকা।
  • দলিলে লিখিত দাম ৫০, ০০০ লাখ টাকা পর্যন্ত হলে রেজিঃ খরচ ১০০০ টাকা।
  • দলিলে লিখিত দাম ৫০ লাখের বেশি যাই হোক রেজিঃ খরচ ২০০০ টাকা।

দলিলের স্ট্যাম্প

  • ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্রাম্পে দলিলটি টাইপ করতে হবে। এ
    ছাড়া প্রতিটি দলিলের মত
  • ২০০ টাকার হলফনামা
  • ই ফি ১০০ টাকা
  • এন ফি প্রতি পাতা ১৬ টাকা বাংলায়, এবং ৩৬ টাকা ইংরেজি হলে। এন
    এন ফি প্রতি পাতা।
  • এন এন ফি প্রতি পাতা ২৪ টাকা বাংলায় এবং ৩৬ টাকা ইংরেজি হলে।

বায়না দলিলের বিশেষ শর্ত

  • উভয়পক্ষকে দলিল সম্পাদন করতে হবে
  • দাতা-গ্রহিতা উভয়কে সাব রেজিস্টারের সামনে উপস্থিত থাকতে হয়।
  • উভয় পক্ষকে দলিলে প্রথম পাতার অপর পৃষ্ঠায় আঙুলের ছাপ দিতে
    হয়।
  • দলিলে একটি বায়নার মেয়াদ থাকবে। যদি মেয়াদ না থাকে তাহলে ৬
    মাস মেয়াদ হবে।
  • মেয়াদে মধ্যে বিক্রেতা রেজিস্ট্রেশন করে দিতে না চাইলে পরের ১
    বছরের মধ্যে দেওয়ানি আদালতে চুক্তি মামলা করে জমি কেনা যাবে।
    সুনির্দিষ্ট আইনের ১২ ধারা মোতাবেক চুক্তি প্রবল করতে হলে একই
    আইনের ২১ক মোতাবেক দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড হতে হবে এবং আদালতে
    মামলা করার সময় বায়নামায় উল্লিখিত বাকি টাকা আদালতে দাখিল
    করতে হবে।
  • তামাদি আইনের ১১৩ অনুচ্ছেদ মোতাবেক এক বছরের মধ্যে মামলা দায়ের
    করতে হবে।
  • মেয়াদের মধ্যে ক্রেতা জমি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে না চাইলে
    বিক্রেতা এক বছরে মধ্যে আদালতে চুক্তি বাতিলের মামলা করে চুক্তি
    বাতিল এবং ক্ষতিপূর্ণ হিসাবে বায়নার টাকা রেখে দেয়ার আবেদন
    করতে পারে। সুনির্দিষ্ট আইনের ধারা ৩৫ মোতাবেক।
  • দলিল সম্পাদনের ৩০ দিনের মধ্যে দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে
    হবে। রেজিস্ট্রেশন আইনের ধারা ১৭ ক মোতাবেক।
  • বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশনের দিন থেকে কার্যকর হবে; সম্পাদনের দিন
    থেকে নয়।
  • বায়নাকৃত জমি বায়না গ্রহিতা ছাড়া অন্য কোথাও বিক্রি করলে সেই
    দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে। 
  • উভয় পক্ষ সম্মত হয়ে বায়না দলিল রহিতকরন দলিল নিবন্ধনের
    মাধ্যমে বায়না বাতিল করা যায়। 
  • বায়না দলিল রহিত করন অথবা আদালতের মাধ্যমে বাতিল করা ছাড়া সেই
    জমি অন্য কারো নিকট বিক্রির জন্য বায়নাপত্রে উল্লিখিত সময় এবং
    পরের একবছর অপেক্ষা করতে হবে, তার পরেই ভিন্ন কোন ব্যক্তির নিকট
    বিক্রি করলে তা বৈধ হবে।

দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় করণীয়

  • একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত দলিল লেখক দিয়ে দিয়ে দলিলটি মুসাবিধা করে
    নিন এবং টাইপিং করে নিন। 
  • সাফ কবলা দলিল সাধারণত ৪০০ টাকার স্ট্যাম্প লিখতে হয় সাথে ৩০০
    টাকার হলফনামা থাকবে মানে মোট ৭০০ টাকার ষ্টাম্পে দলিল টাইপিং
    করতে হয়। বাকি টাকা পে অর্ডারে জমা করা হয়।
  • আপনার দলিলে জমির যে মূল্য সে অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রেশনের
    বিভিন্ন ফি ব্যাংকে পে অর্ডারের মাধ্যেমে জমা করা, কোন ফি কত জমা
    হচ্ছে তা দেখে নিন। পে অর্ডারের একটি ছোট অংশ রশিদ হিসাবে থাকে
    তা বুঝে নিন।
  • দলিলটি ভাল করে পড়ে নিন, জমির দাতার, গ্রহীতার নাম, জমির দাগ,
    জমির পরিমাণ, খতিয়ান নাম্বার। জমির চৌহাদ্দি, হাত নকশা ঠিক আছে
    কিনা ।
  • দলিলের প্রতি পাতায় জমি বিক্রেতার স্বাক্ষর এবং পাতার পিছনে
    ট্রাম্প ভেন্ডারের স্বাক্ষর আছে কিনা।
  • দলিলে কৈফিয়ত বলে একটি কলাম থাকে তা দেখে নিন। দলিলে কোন ভুল
    হলে এখানে লেখা থাকে।
  • দলিলটি রেজিস্ট্রি হয়ে গেলে দলিলের রশিদ, মানে ৫২ ধারার রশিদ
    বুজে নিন।
  • দলিল লেখক যত টাকা নিবে দলিল মুসাবিদা করার জন্য তার একটি রশিদ
    বুঝে নিন।
  • সাথে সাথে অবিকল দলিলের নকলের আবেদন করেন ।
  • আজকাল সাথে সাথেই জাবেদা নকল দেয়ার নির্দেশনা আছে তাই আবেদন
    করেন৷