অনুষ্ঠানের বক্তব্যবিজয় দিবসের উপস্থাপনা

বিজয় দিবসের উপস্থাপনা

অনুষ্ঠান উপস্থাপনার নমুনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনার স্ক্রিপ্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান উপস্থাপনার স্ক্রিপ্ট, নবীন বরণ অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার স্ক্রিপ্ট, অনুষ্ঠান উপস্থাপনার স্ক্রিপ্ট বাংলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনার ছন্দ, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা,
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আমি আজকে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব বিজয় দিবসে
অনুষ্ঠানে কিভাবে উপস্থাপনা করতে হয় এ বিষয় নিয়ে । আমি একটি নমুনের স্ক্রিপ্ট
এর মাধ্যমে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব আশা করি আপনাদের উপকারে
আসবে ।

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান উপস্থাপনার স্ক্রিপ্ট

ধরা যাক বিজয় দিবসে অনুষ্ঠানটি দুই ভাগে বিভক্ত । শুরুতেই আলোচনা সভা যেখানে
প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি সভাপতি উপস্থিত থাকবেন তারা বক্তব্য দেবেন এবং দ্বিতীয়
অংশটি হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলুন তাহলে একটি নমুনা স্ক্রিপ্ট এর মাধ্যমে
ভালোভাবে বুঝিয়ে দিই ।
শুরুতেই ঘোষনা দিতে হবে আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি কারা থাকবে
তাঁদের নাম । নামের আগে অবশ্যই পদবী ঠিকঠাক উল্লেখ করতে হবে ।
সাধারণত অতিথিদের বসার স্থান মঞ্চে বা স্টেজে করা হয় । তাই অতিথিদের আমন্ত্রন
জানাতে হবে মঞ্চে উঠে আসার জন্য । সাধারণত সভাপতি অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে উঠেন ।
তাই বিষয়টি এমন ভাবে বলা যায়ঃ
আমি শুরুতেই আমাদের সভাপতিকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি সম্মানীত প্রধান অতিথি ও
বিশেষ অতিথিকে সাথে নিয়ে মঞ্চে উঠে আসবার জন্য ।
ধরা যাক অনুষ্ঠান শুরু হতে যাচ্ছে অতিথি বৃন্দ স্টেজের যে আসন রয়েছে সেখানে বসে
আছেন উপস্থাপক শুরুটা এভাবে করতে পারেন ।
আজ মহান বিজয় দিবস, ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে
চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব- মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম
হানাদার মুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ।
৩০ লক্ষ শহীদের আত্নদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের ত্যাগ আর তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির
আত্ননিবেদন ও গৌরবগাঁথা গণবীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি
বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন ।
বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন । পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি
স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা
আন্দোলন ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫
শে মার্চ এর গণহত্যা শুরু হলে ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার
ঘোষণা ।
১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ
শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা ।
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঘ সেনাদের আত্ম সমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয়
অর্জিত হয় ।
আজকের এই মহান তিলে সেই সকল বীর শহীদ অভিলাঙ্গনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু
করছি মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমাদের আজকে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
শুরুতেই আমি আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি কাছ থেকে সম্মতি নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করছি ।
যদি অতিথিদের মধ্যে ফুল দেওয়ার বিষয়টি থাকে তাহলে অবশ্যই সম্মানিত
অতিথিবৃন্দদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে হবে এবং কারা কারা ফুল দেবেন সেটাও ঠিক করে
রাখতে হবে ।
ফুল দেওয়ার পরে সবাই আবার বসলেন যদি ফুল দেওয়ার বিষয়টি থাকে এবং এরপরে বক্তব্য
শুরু হবে এবার বক্তব্য রাখার পালা উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেন ।
আমি শুরুতেই বক্তব্য রাখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি আজকের অনুষ্ঠানের
বিশেষ অতিথি অমুকে ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য- বিশেষ অতিথির মধ্যে যিনি পদ অনুযায়ী সর্ব কনিষ্ঠ তিনি আগে
বক্তব্য দেবেন । এভাবে ক্রমানুসারে সবার শেষে যিনি বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি বক্তব্য দেবেন
বক্তব্য দেওয়ার শেষে অতিথিদের ধন্যবাদ জানাবেন উপস্থাপক ।
বিশেষ অতিথিরা একে একে বক্তব্য প্রদান করে ফেললেন এবারে বক্তব্য দেবেন প্রধান
অতিথি
উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে শুরু করতে পারেনঃ
এবারে আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি আমাদের আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব
অমুককে তার মূল্যবান বক্তব্য রাখার জন্য ।
এবারে সবশেষে সভাপতি বক্তব্য, উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেনঃ
আমি এবারে আজকে অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি জনাব অমুককে বক্তব্য রাখার জন্য
বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি ।
আর অবশ্যই প্রত্যেক অতিথির বক্তব্যের পরে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে হবে সুন্দর
বক্তব্য রাখার জন্য ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা

ধরা যাক অতিথিদের একে একে বক্তব্য প্রদান করবার মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শেষ হয়ে
গেল এবারে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে ঘোষণা দিতে পারেন
দর্শকদের উদ্দেশ্যেঃ
সম্মানিত সুধিবৃন্দ অল্পক্ষণের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
ধরা যাক শুরুতেই একটি সমবেত সংগীত বা গানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেনঃ
সম্মানিত সুধিবৃন্দ শুরুতেই সমবেত কণ্ঠে সেই কালজয়ী গান – যদি রাত পোহালে শোনে
যেন…
ধরা যাক এবার আবৃত্তি পরিবেষনা উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেনঃ-
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা । এবার
শুনবো আমরা একটি কবিতা আবৃত্তি এবার আবৃত্তি নিয়ে আসছে- অমুক ।
ধরা যাক এবার নৃত্য পরিবেশনা উপস্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেনঃ
এবার আমরা নৃত্যের তালে তালে হারিয়ে যাবো । এবারের পরিবেশনা দলীয় নৃত্য ।
এভাবে একে একে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে একটা সময় অনুষ্ঠান শেষ হবে শেষ
করার সময় উপস্থাপক কি বলে শেষ করবে এটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়
আপনারা নিজের মতো করে আজ কোন সুন্দর কথা যেটা বিজয় দিবসের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক
এভাবে কথা বলে বিদায় নিতে পারেন ।
বিষয়টি এভাবে বলা যায় বা স্থাপক বিষয়টি এভাবে বলতে পারেনঃ
প্রিয় সুধী স্বাধীনতা রক্ষার জন্য স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে হয় এবং থাকতে হয়
সদা সতর্ক । তাই স্বাধীনতার মর্ম উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা আমাদের জাতীয়
কর্তব্য মনে করা উচিত ।
আসুন সবাই মিলে শপথ নেই জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত ও সুখী
সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার ।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান
বন্ধুরা আমি এতক্ষণ আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করলাম বিজয় দিবসে অনুষ্ঠানে কিভাবে
উপস্থাপনা করবেন । এ বিষয় নিয়ে আপনারা যারা বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা
করতে যাচ্ছেন বা করবেন আশা করি আজকের পোস্ট আপনাদের অনেক কাজে লাগবে আজ এই
পর্যন্তই সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন আল্লাহ হাফেজ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *