খতিয়ানের হিস্যা বের করার নিয়ম
জমির হিস্যা কি
হিস্যা মানে অংশ খতিয়ানে একাধিক মালিক থাকলে কার কত অংশ সেটাই এই হিস্যা বা হারাহারি অংশ । সি এস এস এবং কিছু আর এস খতিয়ানে এই হিস্যা পুরাতন ১৬ আনার হিসাবে থাকে । আর ১৯৮৪ সালের পরে দশমিকের হিসাবে থাকে ।
১৯৬০ সালের আগে অঞ্চলে দশমিকের ব্যবহার ছিল না তাই অংশ লিখতে আনার হিসাবে লিখা হতো । একটি খতিয়ানে একাধিক মালিক থাকলে কার কত অংশ তা বোঝানোর জন্য এই অংশ বা হিস্যা কলাম।
দলিলে জমির অংশ দুভাবে লেখা হয়ে থাকেঃ-
- হাজার পদ্ধতি বা আধুনিক পদ্ধতি ।
- আনা গন্ডা কড়া পদ্ধতি বা প্রাচীন পদ্ধতি ।
খতিয়ানের হিস্যা দশমিক অনুযায়ী
খতিয়ানের হিস্যা বা অংশ ১৯৮৪ সালের পরে দশমিক হিসাবে লেখা হয় । মোট জমিকে ১.০০ বা ১.০০০ ধরা হয় । কিছু খতিয়ানে এখানে দশমিকের পরে ২টী শূন্য বা ৪টি শূন্য হিসাবে মোট জমিকে ধরা হয় । জমির পরিমাণ যাই হোক তাকে ১.০০ বা ১.০০০ ধরা হয় । এজমালি খতিয়ান হলে তাঁদের অংশ এখান থেকে বের করা হয় । যেমন নিচের খতিয়ানে মালিক ৪জন জমির পরিমাণ ৪ একর ২৭০০ অযুতাংশ বা ৪ একর ২৭ শতক প্রত্যেকের অংশ বা হিস্য আলাদা প্রথম জনের .৪০০ বাকিদের .২০০ করে তাহলে প্রথম জনের অংশ বের করার সূত্র হবে- গুন মোট জমি, (.৪০০ * ৪২৭)=১৭০.৮ শতাংশ একইভাবে বাকিদের (.২০০*৪২৭)= ৮৫.৪ শতাংশ করে জমি । এক কথায় হিস্যার সাথে মোট জমিকে গুন করবো দুটি খতিয়ান দেওয়া হলো নমুনা হিসাবে ।
খতিয়ানে একর শতাংশ অযুতাংশের হিসাব বোঝা
জেনে রাখা ভালো খতিয়ানে শতাংশের ঘরে যদি চার সংখ্যার হিসাবে জমির পরিমাণ দেয়া থাকে তবে তা অযুতাংশ হবে, একে শতাংশে নিতে ১০০ দিয়ে ভাগ দিতে হবে । অনেক খতিয়ানে জমির পরিমাণ লেখা থাকে একরে । এখানে এক একর সমান ১০০ শতাংশ তাই যদি ৫০ শতাংশ হয় তাহলে তা ১০০ শতকে এক একর তাহলে ৫০ শতকে ৫০/১০০= ০.৫ একর হবে, ৫ শতক মানে ০.০৫ একর হবে । আবার এই ০.৫ একরকে শতকে নিতে ১০০ দিয়ে গুণ দিলেই হবে ।
- শতক থেকে একরে নিতে ১০০ দিয়ে ভাগ
- আর একর থেকে শতকে নিতে ১০০ দিয়ে গুন
আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিলের হিসাব
পুরাতন খতিয়ানের হিস্যা বের করতে হলে মোট ৫টি একক জানতে হবে ।
- আনা
- গন্ডা
- কড়া
- ক্রান্তি
- তিল
এগুলোর প্রথমটি দ্বিতীয়টির চেয়ে বড়। এদের মধ্যে সম্পর্ক হল-
- ১৬ আনা = পূর্ণ সম্পত্তি খতিয়ানে মোট জমি যাই হোক তাই ১৬ আনা ।
- এক আনা = ২০ গন্ডা ।
- ১গন্ডা = ৪ কড়া ।
- ১কড়া = ৩ ক্রান্তি ।
- ১ ক্রান্তি = ২০ তিল।
খতিয়ানের মোট জমি ১৬ আনা হলে এই জমিকে আমরা এই ভাবে লিখতে পারি-
- ১৬ আনা সমস্ত জমি ।
- ১৬*২০ = ৩২০ গন্ডা সমস্ত জমি ।
- ৩২০*৪ = ১২৮০ কড়া সমস্ত জমি ।
- ১২৮০*৩ = ৩৮৪০ ক্রান্তি সমস্ত জমি ।
- ৩৮৪০*২০ = ৭৬৮০০ তিল সমস্ত জমি ।
আনার সর্বোচ্চ সংখ্যা ১৬ কিন্তু লেখা হয় ১৫ পর্যন্ত ।
কারণ ১৬ হলে তখন আর আনা লেখা হয়না বরং পূর্ণ সম্পত্তি বা এক লেখা হয় । এমনিভাবে-
গন্ডার সর্বোচ্চ সংখ্যা ২০ কিন্তু লেখা হয় ১৯ পর্যন্ত ।
কড়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা ৪ লেখা হয় ৩ পর্যন্ত ।
ক্রান্তির সর্বোচ্চ সংখ্যা ৩ লেখা হয় ২ পর্যন্ত ।
তিলের সর্বোচ্চ সংখ্যা ২০ লেখা হয় ১৯ পর্যন্ত ।
![]() |
আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তি তিল চিহ্ন |