তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত
তাহাজ্জুদ নামাজের ঘটনা
রাতের একাংশে তৎসহ কোরআন পাঠের সঙ্গে তাহাজ্জুদ পাঠ কর, ইহা তোমার জন্য অতিরিক্ত
শীঘ্রই তোমার প্রতিপালক তোমাকে মাকামে মাহমুদ প্রশংসিত স্থান দান করিবেন ।
রাতের সুখময় নিদ্রা ত্যাগ করিয়া আল্লাহর এবাদত করার অর্থে তাহাজ্জুদ শব্দ ব্যবহার
করা হইয়াছে । হযরত রসূল (সাঃ) এর জন্য ইহা অতিরিক্ত অথবা নফল বলিয়া উল্লেখ করা
হইয়াছে । তিনি প্রত্যহ ফরয নামাযের ন্যায় তাহাজ্জুদ পড়িতেন, এমনকি রাতে দাড়াইয়া
থাকিতে থাকিতে তাহাঁর পবিত্র পদদ্বয় উঠিত ।
হযরত রসূলুল্লাহ (সাঃ) হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালার সম্মুখে যে স্থানে উম্মতগণের
জন্য শাফায়াত করিবেন সেই সম্মানিত স্থানকে মাকামে মাহমুদ অর্থাৎ প্রশংসিত স্থান
বলা হয় । তিনি ব্যতীত অন্য কোন মানবের পক্ষে ঐ স্থানে দাঁড়াইবার সৌভাগ্য হইবে না
। অন্যের গোনাহের জন্য সুপারিশ করিতে হইলে নিজে নিষ্পাপ হইতে হয়, আমাদের হযরত
রসূল (সাঃ) নিষ্পাপ ছিলেন, তিনি জীবনে এমন গোনাহ করেন নাই যাহার জন্য হাশরের দিন
তাহাকে আল্লাহ পাকের নিকট শরমেন্দা হইয়া মাথা নত করিতে হইবে । মানব স্বভাবজনিত
দুর্বলতা হেতু কোন সময় অজ্ঞাতসারে ভুল করিলেও তিনি সঙ্গে সঙ্গে তওবা করিয়া মাফ
করাইয়া লইয়াছেন । উপরোক্ত হাদিস হইতে বুঝা যায় যে, তিনি তাহাজ্জুদ নামাযের বদলে
এই ফজিলত লাভ করেছেন ।
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
সমস্ত জগৎ যখন নিদ্রায় মগ্ন, তখন আল্লাহর বান্দা তাহাঁর সুখময় নিদ্রা ছাড়িয়া
আল্লাহর নামে তাহারই এবাদতে দাঁড়াইয়া যায়, এমন এবাদতের ফজিলত ও প্রতিদান যে কি
আছে, তাহা আল্লাহই জানেন । আল্লাহ-প্রেমিকের ইহাই মূল সাধনা, ইহাই তাহাঁর প্রেমের
খাটি নিদর্শন ও মিলনের জন্য এবাদত্মুখী হইয়া উঠে, মানুষকে রূহানী জগতে লইয়া যায় ও
আল্লাহর নিকটবর্তী করে, রাতের নিস্তব্ধ ও নিদ্রিত সৌন্দর্যের অপূর্বভাব এই
মুহুর্তে মানুষ আল্লাহ ছাড়া কাহাকেও আপন মনে করে না, রাতের গভীরতা পরজগতের গভীরতম
রহস্যের কথা স্মরণ করে দেয় । তাহাজ্জুদ নামযের মাহাত্ম্য এইখানেই ।
তাহাজ্জুদ নামাজ পডলে কি হয়
১। যে ব্যক্তি সর্বদা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়িয়া থাকে তাহাঁর সাংসারিক কাজ সহজসাধ্য
হয়, স্বাস্থ্য অটুট থাকে ও উন্নতির পথ সুগম হয় ।
২। তাহাজ্জুদ নামাজের পর যে দোয়া করা হয় তাহা সহজে কবুল হয়, ঐ সময় আল্লাহর রহমতের
দরজা খোলা থাকে ।
৩। কামালিয়াত লাভ করার ইহাই প্রথম সোপান ।
৪। এই নামাজ মানুষের মনকে নম্র করে ও অপকর্ম করার ইচ্ছা দূর করে ।
এরশাদোত্তালেবীন নামক কিতাবে লিখিত আছে যে, নিয়মিতভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীর
কবর হইতে বেহেশত পর্যন্ত নিম্নোক্ত ১৩ জন সঙ্গে থাকিবেন ।
- হযরত আদম সফিউল্লাহ (আঃ) ।
- হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ (আঃ) ।
- হযরত মূসা কালিমুল্লাহ (আঃ) ।
- হযরত ঈসা রূহুল্লাহ (আঃ) ।
- আকায়ে নামদার সরদারে দোজাহান মুহাম্মাদূর রসূলুল্লাহ (সাঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (আঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হয়রত ওসমান গনী (রাঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হযরত আলী (কাঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হযরত জিব্রাঈল (আঃ) ।
- সাইয়্যিদিনা হযরত মিকাঈল (আঃ) ।
- হযরত আযরাঈল (আঃ) ।
- হযরত ইস্রাফীল (আঃ) ।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আরবিতে বাংলা উচ্চারণ
রাসূলিল্লা-হি তাআ-লা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কা’বাতিশ শারী-ফাতি আল্লা-হু
আকবার ।
তাহাজ্জুদ নামাজের বাংলা নিয়ত
করার জন্য নিয়ত করছি, আল্লাহু আকবার ।
৪০ দিন তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
বিস্তারিত আরো জানতে এই ভিডিওটি দেখুন…
কিছুটা হলেও কাজে আসবে । ধন্যবাদ…