শিক্ষক দিবসের বক্তব্য

বিশ্ব শিক্ষক দিবস বক্তব্য | 5th October world teachers day speech in Bangla | শিক্ষক দিবস বক্তৃতা

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য, শিক্ষক দিবস কেন পালন করা হয়, শিক্ষক দিবস রচনা, জাতীয় শিক্ষক দিবস, শিক্ষক দিবস কার জন্মদিন, শিক্ষক দিবস সম্পর্কে দুটি বাক্য, জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৩, শিক্ষক দিবসের ইতিহাস, শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য, শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য অসমীয়া, শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কবিতা, শিক্ষক নিয়ে বক্তব্য, প্রিয় শিক্ষক নিয়ে বক্তৃতা, শিক্ষক দিবস সম্পর্কে দুটি বাক্য, শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা শিক্ষকের, শিক্ষক দিবসের উপস্থাপনা,
৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে একটি লিখিত নমুনা বক্তব্য স্ক্রিপ্ট
লিখে দিলাম । আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে ।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস বক্তব্য

আজ ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস ।
অমুক স্কুল/কলেজ কতৃক আয়োজিত বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আজকের এই মহতী অনুষ্ঠানে
উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, উপস্থিত
ছাত্র-ছাত্রী ও সুধীমন্ডলি সকলকে স্বাগতম । আমার বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধা
জ্ঞাপন করছি সম্মানির শিক্ষকদের প্রতি । আজকের এই অনুষ্ঠানে মহান শিক্ষকদের
সম্পর্কে কিছু বলার সুযোগ পেয়ে সম্মানিত বোধ করছি ।
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসাবে ঘোষণা করা হয় । এরই ধারাবাহিকতায়
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ৫ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক ভাবে ইউনোস্কোর উদদ্যেগে প্রথম
বিশ্ব শিক্ষক পালিত হয় ।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩ এর স্লোগান হচ্ছে The transformation of education
begins teacher. অর্থৎ শিক্কার রুপান্তর শুরু হয় শিক্ষকদের দিয়ে ।
এবারের প্রতিপাদ্যটি বেশ চমৎকার ও বর্তমান সময়ের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক ।
শিক্ষকরা হলো জাতি গড়ার কারিগর । আর শিক্ষার যথাযথ বিকাশ ও শিক্ষাকে জাতির মাঝে
রুপান্তরের দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরাই ।

জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৩

১৯৯৫ সাল থেকে ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের
অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ।
ইউনেস্কোর হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ২৬৪ মিলিয়ন শিশু ও যুবক স্কুলের
প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়ে গেছে ।
২০৩০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সর্বজনীন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পৌছে দেওয়ার জন্য
প্রায় ৬ কোটি শিক্ষক প্রয়োজন ।
জাতির ভবিষ্যৎ তথা প্রজন্মকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার গুরু দায়িত্ব শিক্ষকদের হাতেই ।
আর এর জন্য শিক্ষকদের হাতে হবে দক্ষ ও যোগ্য ।
শিক্ষাকে যদি জাতির মেরু দন্ড ধরা হয়, তবে সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা হলেন শিক্ষার
মেরুদন্ড ।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা শিক্ষকের

বিশ্ব সম্প্রদায়কে আজ এটাই মনে করিয়ে দেওয়া যে,
শিক্ষার অধিকার প্রশিক্ষিত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক ছাড়া অর্জন করা সম্ভব নয় ।
বিশ্ব চ্যালেজঞ্জ মোকাবিলায় আজও যোগ্য শিক্ষকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে ।
শিক্ষকই সবার জন্য সমান ও মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের চাবিকাঠি ।শিক্ষক হচ্ছে এমন
একটা মাধ্যম, যার মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা হয় এবং শিক্ষক ছাড়া একটি মৌলিক
মানবাধিকার পূরণ করা যায় না ।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিখা ও উন্নয়নে শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা
হয়ে থাকে ।
বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে এই দিবস পালিত হয় । এই দিবস পালনে
Education International (ET) ও তাঁর সহযোগী ৪০১ টি সদস্য সংগঠন মূল
ভূমিকা পালন করে ।
আজ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, যারা শিক্ষকতার মত মহান পেশার সাথে জড়িত ছিলেন
বা আছেন তাঁদের ।
এ দিবসটি শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । কেননা এ দিনে পৃথিবীজুড়ে
শিক্ষকদের আলাদাভাবে স্মরণ করা হয়, শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং কর্মক্ষেত্রে কাজের
স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা দেওয়া হয় ।
অনেক দেশে দিবসটি ভিন্ন তারিখে পালিত হয় । বিশ্বে যেসব শিক্ষক স্মরণীয়-বরণীয়
হয়েছেন, তারা লড়াই যেমন করেছেন, তেমনি ধৈর্য আর ত্যাগের অসাধারণ দৃষ্টান্ত রেখে
গেছেন ।

প্রিয় শিক্ষক নিয়ে বক্তৃতা

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কথাই বলিঃ-
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হতে গিয়ে উনি কত যে লাঞ্ছনা আর নির্যাতনের শিকার
হয়েছেন, তা তো সবার জানা ।
কিন্তু পবিত্র কোরানের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলা প্রেরিত হুকুম-আহকামগুলো
মানুষকে শিক্ষা দিতে কখনো পিছপা হননি ।
জাগতিক কোনো কিছুর জন্য নয়, বরং মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তিনি
আজীবন শিক্ষাদানের কাজটি করে গেছেন ।
যার ফলে বিশ্ব আজ পেয়েছেন শান্তির এক পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান ইসলাম, যা হইকাল আর
পরকালের শান্তি ও কামিয়াবি লাভের উপায় ।
বিশবিখ্যাত দার্শনিক সত্রেটিস মূলত ছিলেন একজন শিক্ষক । আর তাঁর এই শিক্ষাদানের
পিছনে জাগতিক কোনো চাওয়া-পাওয়ার বিষয় না থাকা সত্ত্বেও তাকে এথেন্সের তৎকালীন
শাসকগোষ্ঠী মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল ।
তাতে সত্রেটিসের অবশ্য কোনো ক্ষতি হয়নি, বরং সারা বিশ্বে আজ তিনি স্মরণীয়-বরণীয়
এক দার্শনিক ও শিক্ষকের প্রতীক হয়ে বেঁচে আছেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বক্তব্য

আমাদের সমাজেও যেসব সম্মানিত শিক্ষক নিঃস্বা‌র্থভাবে একটু গতানুগতিকতাঁর উর্ধ্বে‌
ওঠে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে পারেন, তারা নিঃসব্দেহেই স্মরণীয় ও বরণীয় হন ।
শুরু যে শিক্ষার্থীরা তাঁদের সম্মান করে এমন নয়, বরং সমাজেও তারা বরণীয় হয়ে থাকেন
আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে অন্যান্য বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সমাজে খুব
সম্মান পান । কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি অন্য রকম মনে হয় । তারা সম্মান পান ঠিকই,
তব ব্যক্তি হিসেবে নন, মানুষ সম্মান করেন তাঁদের পদকে । কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া পদ
চলে যাওয়ার পর তাঁদের সম্মানও চলে যায় ।
কিন্তু একজন আদর্শ শিক্ষকের সম্মান কিন্তু কোনো দিনই কমে না । এমনকি মৃত্যুর পরও
না । তবে এমন আদর্শ মানে পৌছাতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম যেমন দরকার, তেমনই ত্যাগ
স্বীকারও অপরিহার্য ।
আমাদের দেশে সরকারিভাবে অনেক দিবসই পালন করা হয় । এসব দিবস পালনের অনুষ্ঠানে
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিত থাকতে হয় । কিন্তু শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসটি এতদিন সরকারিভাবে পালন করা হয়নি ।
এবছর সরকার এই দিবসটি সরকারিভাবে পালন করার সিন্ধান্ত নিয়েছে, যা নিঃসব্দেহে
প্রসংশনীয় । শিক্ষকেরা এতো সম্মানিত বোধ করেছেন, যা তাঁদের জন্য বড় ধরনের একটা
প্রণোদনা হিসেবে কাজ করছে ।
আমরা সবাই জানি শিক্ষকদের অনেক বঞ্চনা আছে, আছে পাওয়া না পাওয়ার পুঞ্জীভূত বেদনা
। তবু, শিক্ষকেরা যা পান, অন্য কোনো পেশার কেউ তা পান না ।
একজন শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে যে আন্তরিক ও অকৃত্রিম সম্মান ও
ভালোবাসা পান, তাঁর সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কিছুর তুলনা হতে পারে না ।
আর তাই আমরা এই পেশাটাকে অন্য কোনো পেশার চেয়ে কোনোমতেই ছোট মনে করি না ।

জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৩

আজ মনের গভীর থেকে বিশ্বের সকল শিক্ষককে জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা । শিক্ষার
আলোয় আলোকিত হোক গোটা জাতি । বাংলাদেশের শিক্ষকরা নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও
জ্ঞানে বিতরণের মহান কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছে ।
কিন্তু যোগ্য ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাবও রয়েছে । প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা
পর্যন্ত এই সমস্যা বিদ্যমান ।
শিক্ষদের মধ্যে রয়েছে বেতন বৈষম্য । যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষদের বেতন কাঠামো
নির্ধারিত হওয়া উচিৎ, কিন্তু আমাদের দেশে শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী বেতন কাঠামো
নির্ধারিত হয়, যা খুবই দুঃখজনক ।
পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবেও শিক্ষকের দক্ষতা ও গুনগত মানের উন্নয়ন হচ্ছে না ।
প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ বর্তমানে শিক্ষদের উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে ।
শুধু তাই নয় শিক্ষকদের সন্তোষজনক বেতনপ্রাপ্তিও পাঠাদানে মনোযোগী হতে আগ্রহী করবে
উচ্চশিক্ষায় পাঠদানরত অনার্স মাস্টার্স শিক্ককরা এখনও ননএমপিও । অথচ এরাই উচ্চ
শিক্ষাদানে ৭০ ভাগ অবদান রেখে চলেছেন । কিন্তু যাদের জীবন মানের কোন উন্নতি নেই,
তারা কীভাবে কোয়ালিটি শিক্ষা দেবেন?
শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের দেওয়া ৫/১০ হাজার টাকায় তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ।
শিক্ষকের জীবন মানের উন্নয়ন হোক, তৈরি হোক যোগ্য শিক্ষক আলোকিত হোক সমাজের প্রতি
মানুষ, বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার ।
সবাইকে ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *