শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ | শেখ রাসেল দিবসের বক্তব্য | শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত | sekh rasel speech
শেখ রাসেল দিবসে নমুনা বক্তৃতা
ভূমিকা
ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে অনেক বড় বড় ব্যক্তির নাম কিন্তু সম্মানিত
ব্যক্তির নামের তালিকা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সবার উপরে । তিনি স্বাধীন
বাংলার স্থাপত্য । তিনি মহিমাময় রাজনীতির কবি । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি
নাম একটি আদর্শ । তাই বাঙালি জাতি তাকে জাতির জনক হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে
। তিনি বাংলাদেশ ও বাঙালির জাতির গর্ব ও অহংকারের প্রতীক তেমনি শেখ রাসেল ও
আমাদের গর্ব ও অহংকার এর প্রতীক । শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধু বংশের শুধু প্রদীপ নয় সে
ছিল বাঙালি জাতির প্রদীপ এবং এই বাংলার একটি নক্ষত্র ।
শেখ রাসেলের জন্মদিন কবে
তখন হেমন্তকাল সময়টা ১৮ই অক্টোবর ১৯৬৪ সাল । নতুন ফসলের উৎসবে আগমন ননুন
অতিথির । এ যেন বাঙালির আনন্দ, বাংলার আনন্দ । ধানমন্ডির সেই ঐতিহাসিক ও ৩২ নম্বর
রোডের বাসায় শেখ হাসিনার রুমে রাত দেড়টার সময় শেখ রাসেলের জন্ম হয় । রাসেকের
আগমেন পুরো বাড়ি জুড়ে আনন্দের জোয়ার বয়ছিল । একটু বড়োসড়ো হয়েছিল শিশু রাসেল ।
জন্মের কিছুক্ষণ পর পরিবারের সবাইকে রাসেলের কথা জানানো হয় । পরে শেখ হাসিনা এসে
ওড়না দিয়ে ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেয় ।
শেখ রাসেলের নামকরণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক
বার্ট্রান্ড রাসেল এর ভক্ত । তাঁর অনেক বই তিনি পড়েছেন । বার্ট্রান্ড রাসেল
কেবল মাত্র একজন দার্শনিক ছিলেন না বিজ্ঞানীও ছিলেন । পরমানবিক যুদ্ধবিরোধী
আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতাও । বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য বার্ট্রান্ড রাসেল গঠন
করেছিলেন- “কমিটি অফ হ্যান্ডয়েড” রাসেলের জন্ম এর দুই বছর পূর্বেই ১৯৬২ সালে
কিউবা কে কেন্দ্র করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং সোভিয়েতের প্রধানমন্ত্রী
ক্রশেফ এর মধ্যে কূটনৈতিক যুদ্ধ চলছিল । যেটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে
যাচ্ছিলো । ঠিক তখনই বিশ্ব মানবতার প্রতীক হয়ে অভিভূত ছিলেন বিখ্যাত দার্শনিক
বার্ট্রান্ড রাসেল । আর তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর কনিষ্ঠপুত্র
এর নাম করণ করেন রাসেল ।
শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধুর কত তম সন্তান
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঢাকা অঞ্চলের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ীতে বঙ্গবন্ধু ভবনে
১৮ই অক্টোবর ১৯৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন ।
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ । ভাইবোনের মধ্যে শেখ হাসিনা,
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল, বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ শেখ
রেহেনা, শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র
ছিলেন ।
বঙ্গবন্ধুর পরিবার গনহত্যা
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট প্রত্যুষে একদল তরুন সেনা কর্মকর্তা ট্যাংক দিয়ে শেখ
মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাসভবন ঘিরে ফেলে । শেখ মুজিব তাঁর পরিবার এবং
তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয় । শেখ মুজিবর এর
নির্দেশে রাসেলকে নিয়ে পালানোর সময় ব্যক্তিগত কর্মচারীসহ রাসেলকে
অভ্যুস্থানকারীরা তাকে আটক করে । আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কান্না জড়িত কন্ঠে
বলেছিলেন আমি মায়ের কাছে যাব । পরবর্তীতে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত করেছিলেন
আমাকে হাসু আপা (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দাও ।
শেখ রাসেল এর দুরন্ত শৈশব
বঙ্গবন্ধু বাসায় একটি পোষা কুকুর ছিল টমি নামে । টমি সবার সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব ছিল
। ছোট রাসেলকে নিয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ টমি ঘেউ ঘেউ করে ডেকে উঠে তখন রাসেল ভয় পেয়ে
যান । কাঁদতে কাঁদতে শেখ রেহানার কাছে এসে বলে টমি আমাকে বকা দিয়েছে । তাঁর কথা
শুনে বাসার সবাই আত্মহারা টমি আবার কিভাবে বকা দিলো । কিন্তু রাসেলের বিষয়টা খুব
গভীরভাবে নিয়েছিলেন । টমি তাকে বকা দিয়েছিলেন এটা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না
কারণ টমিকে সে খুব ভালোবাসত, হাতে করে খাবার দিত । সে নিজের পছন্দমত খাবারগুলো
টমিকে ভাগ করে দেবেই কাজেই সেই টমি বকা দিলে রাসেল তো দুঃখ পাবেই । এরইমধ্যে জন্ম
হয় শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের । রাসেল জয়কে পেয়ে মহাখুশি সে তাঁর নতুন একসঙ্গী
পেয়েছে । সারাটা সময় জুড়ে জয়ের সাথে মিশে থাকতো রাসেল । এরই মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে
যায় কিন্তু রাসেল তাঁর নিজেকে নিয়ে চিন্তা নেই । তাঁর সমস্ত চিন্তা জয়কে নিয়ে
কারণ তাঁদের বাসার ছাদে ব্যাংকারের মেশিন বসানো ছিল । ফলে দিনরাত গোলাগুলিতে
প্রচন্ড আওয়াজ হয় বারবার কেঁপে কেঁপে উঠত । আর এ ব্যাপারে রাসেল খুবই সচেতন ছিল
যখন আকাশ মেঘের মতো আওয়াজ হত রাসেল তুলা নিয়ে জয়ের কানে গুজে দিত । সবসময় পকেটে
তুলা নিয়ে রাখতো । রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল কিন্তু সে মাছ ধরে আবার তা পুকুরে
ছেড়ে দিত । উদ্দেশ্যে মজা, আসলেই এটা তাঁর খেলা । সুতরাং পরিশেষে বলা যায় যে,
প্রাণীর প্রতি এরকম অকৃত্রিম ভালোবাস তাকে করেছে আমাদের সকলের বন্ধু ।
শেখ রাসেল এর ছেলেবেলা
শেখ রাসেল ছিলেন ভীষণ দুরন্ত । তাঁর দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-সাইকেল । তিনি
রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছাড়াই সাইকেলে করে স্কুলে যেতেম পাড়ার আর দশজন সাধারণ ছেলের
মতো ।
শেখ রাসেল এর শিক্ষা জীবন
ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার পেছনে পরিবার একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে ।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ মাতা । তিনি তাঁর সন্তানদের
নৈতিক শিক্ষায় মানুষ করেছেন, দিয়েছেন মানবিক গুনাবলিও । ঠিক তেমনিভাবে শেখ
হাসিনার মাঝে অনুরূপ গুণাবালি প্রতীয়মান ।
তিনি তাঁর সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা আর মানবিক গুণাবলি দিয়ে জয় পুতুলকে গড়ে তুলেছেন
। শিশু রাসেল বেঁচে থাকলে আজকে ৫৫ বছরের মানুষটিও হতেন এক অন্যন্য গুণাবলির
ব্যক্তিত্ব । বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করেই
ক্ষ্যান্ত যায়নি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন করতে
চেয়েছিল । আর তাঁদের ওই ঘৃণ্য অপচেষ্টা যে শতভাগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে- এটি
আজ প্রমাণিত ।
শেখ রাসেল কত বয়সে মারা যায়
তখন শিশু শেখ রাসেলের বয়স ছিল ১১ বছর বয়স মাত্র ।
উপসংহার
রাসেল তাঁর বাবাকে কাছে পাবার সুযোগ খুব কমই পেয়েছে । তাই বাবাকে যখন কাছে পেতেন
সারাক্ষণ তাঁর পাশে ঘোরাঘুরি করতো । খেলার ফাকে ফাকে বাবাকে এক পলকের জন্য হলেও
দেখে আসত । রাসেল যদি শিশু বয়সে মৃত্যু না হতো তাহলে বঙ্গবন্ধুর মতো বাঙালি জাতির
পিতা হিসেবে রাসেলের স্থান পেত । সুতরাং রাসেলের বাল্য জীবন থেকে শিক্ষাপেতে পারি
য আমাদের রাসেল ছিল প্রকৃত বন্ধু এবং বাঙালি জাতির মহানায়ক ।
tag…
শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত,শেখ রাসেল দিবস ২০২৩,শেখ রাসেলের জন্মদিন কবে,শেখ
রাসেল দিবস কবে পালিত হয়,শেখ রাসেল দিবস অনুচ্ছেদ,শেখ কামাল দিবস কবে,শেখ রাসেল
পদক,শেখ রাসেল কত বয়সে মারা যায়,শেখ রাসেল দিবসের বক্তৃতা, শেখ রাসেল বক্তৃতা,
শেখ রাসেল দিবস, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে ভাষন দিব, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে
বক্তৃতা দিব, শেখ রাসেল দিবসে নমুনা বক্তৃতা, শেখ রাসেল দিবসে নমুনা ভাষণ, শেখ
রাসেল দিবসে কিভাবে ভাষন শুরু করবো, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে বক্তৃতা শুরু করবো,
sekh rasel, shaikh rasel, sek rasel, sekh rasel dibos, sekh rasel speech, sekh
rasel day, sekh rasel vason, sekh rasel boktita, shaikh rasel boktita, শেখ
রাসেলের জন্মদিন, ১৮ অক্টোবর, 18 October, sekh rasel birthday