অনুষ্ঠানের বক্তব্যশেখ রাসেল দিবস

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে বক্তব্য বা ভাষণ | শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে কিভাবে ভাষণ দিব | শেখ রাসেল দিবস বক্তব্য

শেখ রাসেল দিবসের বক্তৃতা, শেখ রাসেল বক্তৃতা, শেখ রাসেল দিবস, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে ভাষন দিব, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে বক্তৃতা দিব, শেখ রাসেল দিবসে নমুনা বক্তৃতা, শেখ রাসেল দিবসে নমুনা ভাষণ, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে ভাষন শুরু করবো, শেখ রাসেল দিবসে কিভাবে বক্তৃতা শুরু করবো, sekh rasel, shaikh rasel, sek rasel, sekh rasel dibos, sekh rasel speech, sekh rasel day, sekh rasel vason, sekh rasel boktita, shaikh rasel boktita, শেখ রাসেলের জন্মদিন, ১৮ অক্টোবর, 18 October, sekh rasel birthday

শেখ রাসেল দিবসে নমুনা বক্তৃতা

আজ ১৮ই অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে
পাহাড়পুর বাজার ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত আজকের অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, আমার
শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলী, মঞ্চে উপস্থিত বিচারক গণ, ও আমার সহপাঠী ভাই ও বোনেরা
সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সালাম আসসালামু আলাইকুম ।
আজকের আমাদের বক্তব্যের বিষয় হল শেখ রাসেলের জীবন বৃত্তান্ত সম্পর্কে বক্তব্য।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছে মুজিবের সর্বকনিষ্ঠপুত্র শেখ
রাসেল । শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ই অক্টোবর ধানমন্ডি ৩২ং বাড়িতে নিচ তলায় কামাল
ও শেখ হাসিনার রুমে রাত দেড়টায় জন্মগ্রহণ করে । বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রিয় লেখক
খ্যাতিমান দার্শনিক ও নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে
পরিবারের নতুন সদস্যের নাম রাখেন রাসেল । 
শেখ রাসেল রাত দেড়টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন । শৈশব থেকেই দুরন্ত প্রাণবন্ত রাসেল
ছিলেন পরিবারের সবার অতি আদরের । পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে রাসেল সর্বকনিষ্ঠ ।
ভাই-বোনের মধ্যে অন্যরা হলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল, বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ শেখ
রেহানা । মাকেই আব্বা বলেই ডাকত রাসেল আব্বার সঙ্গে প্রতি ১৫দিন পর রাসেল দেখা
করতে যেতাম । রাসেলকে নিয়ে গেলে ও আর আসতে চাইত না । খুবই কান্নাকাটি করত । ওকে
বোঝানো হয়েছিল যে, আব্বার বাসা জেলখানা আর আমরা আব্বার বাসায় বেড়াতে এসেছি ।
আমরা বাসায় ফেরত যাব । বেশ কষ্ট করেই ওকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হতো । বাসায় আব্বার
জন্য কান্নাকাটি করলে মা ওকে বোঝাতেন এবং মাকে আব্বা বলে ডাকতে শেখাতেন । তাই
সে মাকেই আব্বা বলে । 
১৯৭১ সালে রাসেল তাঁর মা ও দুই আপাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ধানমন্ডি ১৮
নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন । পিতা বঙ্গবন্ধু তখন
পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি এবং বড় দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল চলে গেছেন
মুক্তিযুদ্ধে । মা ও আপাসহ পরিবারের সদস্যরা ১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর মুক্ত হন
। রাসেল জয় বাংলা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার
পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের
১০ই জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন । 
বঙ্গবন্ধু আসার পর শেখ রাসেলকে ইউনিভার্সিটি অব লাইব্রেরী স্কুলে ভর্তি করিয়ে
দেওয়া হয় । রাসেল তাঁর জীবনে কখনো কবুতরের মাংস খায় নি কারণ কবুতর পাখি তাঁর
অনেক প্রিয় ছিল সে নিজ হাতে কবুতরদের খাবার দিত । সময়টা ১৯৭৫ সালের আগস্ট রাতের
গণ অন্ধকারে ধানমন্ডি ৩২ং বাড়িতে বাবা মা দুই ভাই ভাইয়ের স্ত্রী এবং মোট ১৮
জনসহ সর্বশেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল এই ছোট্ট প্রাণটিকে । 
রাসেলের বয়স তখন ছিল মাত্র ১০ বছর ৯ মাস ২৮ দিন । তখন শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি
ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন । ভাগ্যক্রমে সেদিন শেখ
হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান কারণ তখন শেখ হাসিনা তাঁর স্বামীর কর্মস্থল তথা
জার্মানিতে গিয়েছিলেন কেউ নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু শেখ রাসেলের জন্ডিস
হয়েছিল তাই জন্য শেখ ফজিলাতুন্নেছে মুজিব থাকে যেতে বাধা দিয়েছেন যদি শেখ রাসেল
সেই দিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানের সাথে জার্মানি যেতেন তাহলে এরকম নিষ্ঠুর ভাবে
হত্যা করতে পারত না । বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব শেখ কামাল জামাল শেখ
রাসেল সহ ওই দিন শহীদ হওয়া ১৮ জনকেই বনানীতে সময় তো করা হয় ।
এই বলে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি সবাইকে ধন্যবাদ আসসালামু আলাইকুম ।

শেখ রাসেল দিবসে নমুনা ভাষণ ২

মাননীয় সভাপতি উপস্থিত সুধীমন্ডলী সবাইকে আসসালামু আলাইকুম ।
সময়টা ছিল লড়াই আর যুদ্ধের উত্তেজনায় মুখর ১৯৬৪ সাল । তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে
ঘটে চলেছে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ।
সমগ্র পাকিস্তান জুড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোল । একদিকে প্রসিডেন্ট আইয়ুব
খান অন্যদিকে সম্মিলিত বিরোধীদলের প্রার্থী কায়েদে আজম মুহম্মদ আলী জিন্নার বোন
ফাতেমা জিন্নাহ ।
অনিশ্চয়তা আর অন্ধকারের মাঝেও এ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে । যিনি এই
স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বাঙালি জাতিকে এনে দেবেন মুক্তির স্বাদ তাঁর ঘর আলো করে
জন্ম নিল এক ছোট্ট শিশু ।
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবরে ধানমন্ডির বিখ্যাত ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক
বাড়িটি আলোকিত করে জন্ম নিল শেখ রাসেল । রাসেল নামটি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান ।
তাঁর প্রিয় লেখকের নামের সাথে মিলিয়ে । শেখ রাসেল ছিলেন ভীষণ দুরন্ত । তাঁর
দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-সাইকেল । তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছাড়াই সাইকেলে করে
স্কুলে যেতেন পাড়ার আর দশজন সাধারণ ছেলের মতো ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ১১ বছর বয়সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য
সদ্যসদের সঙ্গে ঘাতক খুনীদের হাতে হত্যার শিকার হন তিনি ।
পৃথিবীতে যুগে যুগে রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটেছে কিন্তু এমন নির্মম, নিষ্ঠুর এবং
পৈশাচিক হত্যাকান্ড কোথাও ঘটেনি । বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে রাসেল্কে নিয়ে পালানোর সময়
ব্যক্তিগত কর্মচারীসহ রাসেলকে আটক করা হয় ।
আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, আমি মায়ের কাছে যাব । পরবর্তী সময়ে
মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কন্ঠে মিনতি করেছিলেন, আমাকে হাসু আপার (শেখ
হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দিন ।
মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার
শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল রাসেলকে । ওই ছোট্ট বুকটা কি তখন ব্যথায় কষ্টে বেদনায়
স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল?
যাদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসে খেলে বড় হয়েছে তাঁদের নিথর দেহগুলো পড়ে থাকতে
দেখে ওর মনের কী অবস্থা হয়েছিল, কী কষ্টই না ও পেয়েছিল ।
শিশু রাসেলকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে ঘতকরা মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃন্যতম অপরাধ
করেছে । এ ধরনের নিষ্ঠুর ‘মার্সি কিলিং’ শুধু রাসেলের জীবনকেই কেড়ে নেয়নি সে সাথে
ধ্বংস করেছে তাঁর সকল অবিকশিত সম্ভাবনা ।
প্রিয় পাঠক আজকের এই লেখাগুলো যদি আপনার কাছে আসে তাহলে একটা কমেন্ট করে জানাবেন
। বন্ধুদের কাছে সেয়ার করবেন । ধন্যবাদ…