বিজয় দিবসের বক্তব্য || ১৬ ডিসেম্বর || Speech for victory day Bangladesh || 16 December boktobbo
দীর্ঘ ৯ মাস রক্তপক্ষয়ি যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়াদী
উদ্যানে পাকিস্তানী বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত
যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে । এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ
নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যদয় ঘটে ।
চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের । বিজয়ের
অনুভূতি সব সময়ই আনন্দের । তবে একইসঙ্গে দিনটি বেদয়ারও, বিশেষ করে যারা স্বজন
হারিয়েছেন তাঁদের জন্য । অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের ফসল আমাদের স্বাধীনতা ।
আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহিদদের, যেসব নারী ভয়াবহ
নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, সেই ২ লক্ষ মা-বোনকেও গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি ।
স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে । ৫০ বছরের এ
পথপরিত্রমায় উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ
। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে । তবে দারিদ্র এখনও প্রকট । অর্থনৈতিকভাবে আমাদের
আরও এগিয়ে যেতে হবে ।
১৬ ডিসেম্বর ভোরে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসে সূচনা ঘটে । জাতীয় প্যারেড স্কয়ার
অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন । কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে সালাম গ্রহণ
করেন রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ
হিসেবে ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী
দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ
পুস্পস্তবক অর্পণ করে থাকেন ।
পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ
যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছিল । সেদিন ঢাকার কেন্দ্রস্থলে
রেসকোর্স ময়দানের পাকিস্তানের পক্ষে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন জেনারেল
আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি । তিনি যৌথবাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার
কাছে আত্মসমরপণ করেন । এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর
উপ-সর্বাধিনায়ক ও ডেপুটি চীফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল করিম খোন্দকার
উপস্থিত ছিলেন ।
আত্মসমর্পণের দলিলে জেনারেল জগজিত সিং অরোরার সামনেসই করেছেন ।
স্বীকৃতি প্রদান করে । একই তারিখে ভারত দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি
প্রদান করে । পরে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত সকল দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ।
সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ।
বিজয় দিবসের বিশেষ কিছু ঘটনা
- ১৯৭২ঃ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান প্রকাশিত হয় ।
-
১৯৭২ঃ ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গ্যাজেটের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ
অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব ঘোষণা করা হয় । - ১৯৯৬ঃ বিজয়ের ২৫ বছর পূর্তি উৎসব করা হয় ।
-
২০১৩ঃ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ২৭,১১৭ জন স্বেচ্ছাসেবী বাংলাদেশের
জাতীয় পতাকার লাল এবং সবুজ ব্লক নিয়ে একত্রে জড়ো হয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মানব
পতাকার নতুন বিশ্ব রেকর্ড করে ।