জাতীয় শোক দিবস লিখিত নমুনা ভাষণ – National Mourning Day speech
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের বক্তব্য
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত
প্রধান, অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত আমন্ত্রিত অতিথি বৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী
ও সুধিমন্ডলী আসসালামু আলাইকুম ।
প্রধান, অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত আমন্ত্রিত অতিথি বৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী
ও সুধিমন্ডলী আসসালামু আলাইকুম ।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এততম শাহাদাত বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে
তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এততম শাহাদাত বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে
তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে রাজধানী ঢাকায় সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের এক
কলঙ্কিত অধ্যায় ।
কলঙ্কিত অধ্যায় ।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনা
সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন ।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনা
সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন ।
সেদিন তিনি ছাড়াও ঘাতকের বুলেট নিহত হন
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব । এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও
আত্মীয়-স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন ।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব । এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও
আত্মীয়-স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন ।
১৫ আগস্ট নিহত হন মুজিব পরিবারের সদস্যবৃন্দ
- ছেলেঃ শেখ কামাল,শেখ জামাল ও শিশু পুত্র শেখ রাসেল ।
- পুত্রবধুঃ সুলতালা কালাম ও রোজী কামাল ।
- ভাইঃ শেখ আবু নাসের ।
- ভগ্নিপতিঃ আব্দুল রব সেরনিয়াবাত ।
- ভাগনেঃ শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি ।
- বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসেন কর্নেল জামিল উদ্দীন তিনিও তখন নিহত হন ।
আজকের এই শোক সভায় সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া
হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণার বিষবাষ্প ।
হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণার বিষবাষ্প ।
পশ্চিম জার্মানির নেতা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী
উইলি ব্রান্ডিট বলেছিলেন-
মুজিবকে হত্যার পর বাঙ্গালীদের আর বিশ্বাস করা যায় না যে বাঙালি শেখ মুজিব কে
হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে ।
হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে ।
দ্য টাইমস অফ লন্ডনের ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়-
সবকিছু সত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাকে ছাড়া বাংলাদেশের
বাস্তব কোন অস্তিত্ব ।
বাস্তব কোন অস্তিত্ব ।
একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে-
বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি
হিসেবে বিবেচনা করবে ।
হিসেবে বিবেচনা করবে ।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ
-
শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের
আইনি ব্যবস্থা থেকে অনাক্রম্যতা বা শাস্তি এড়াবার ব্যবস্থা প্রদানের জন্য
বাংলাদেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল । -
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ
এ ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন । - এই হত্যাকাণ্ডের পর বরগুনায় এর প্রথম প্রতিবাদ হয়।
-
মুক্তিযোদ্ধা মোতালেব মৃধা বরগুনা এসডিও সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সহায়তায়
ছাত্রলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মীর ঝটিকা
মিছিল করেন । -
পরবর্তীতে এটি বরগুনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা যোগ
দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে । -
কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, খুলনা, যশোর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, নেত্রকোনার, মোহনগঞ্জ,
ময়মনসিংহের গফরগাঁও সহ বিভিন্ন জায়গায় ১৫ ই আগস্ট সকালে প্রতিবাদ হয় । -
পরবর্তীতে আব্দুল কাদের সিদ্দিকী ১৭ মুজিব ভক্তকে সাতটি ফ্রন্টে ভাগ করে ২২
মাস প্রতিরোধ যুদ্ধ করেন । শেরপুর সদর, শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নকলা
উপজেলায় ৫০০ তরুণের ‘শেরপুরের ৫০০ প্রতিবাদী’র বিদ্রোহ ও লড়াই আলোচিত ছিল
। -
১৮ই অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টার ও দেয়াল লিখনের মাধ্যমে
প্রতিবাদ জানাই ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন । ২০ অক্টোবর প্রতিবাদ সমাবেশ হয়
। -
১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় এই
হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হয়। - ১২ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয় ।
-
১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত সহকারী মুজিব হত্যাকান্ডের
মমলা করেন । - ১ মার্চ ১৯৯৭ সালে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার কার্য শুরু হয় ।
-
৮ নভেম্বর ১৯৯৮ সালে জেলা ও দায়রা জজ কাজি গোলাম রসুল ১৫ জনকে
মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেন । -
১৪ নভেম্বর ২০০০ সালে হাইকোর্টে মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের দুই বিচারক
বিচারপতি রুহুল আমিন এবং বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক দ্বিমতে বিভক্ত রায়
ঘোষণা করেন । -
এরপর তৃতীয় বিচারপতি ফজলুল করিম ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত দেন । - এর পর পাঁচজন আসামি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে ।
-
২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল তৃতীয় বিচারক মোঃ ফজলুল করিম ২৫ দিন শুনানির পর
অভিযুক্ত ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিত করেন । -
২০০৯ সালে ২৯ দিন শুনানির পর ১৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচজন বিচারপতি
রায় ঘোষণায় আপিল খারিজ করে ১২ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন । -
আপিল বিভাগ ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর থেকে টানা ২৯ কর্ম দিবস শুনানি করার পর ১৯
নভেম্বর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন । -
২০১০ সালের ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগে আসামিদের রিভিউ পিটিশন দাখিল এবং তিন
দিন শুনানি শেষে ২৭ জানুয়ারি চার বিচারপতি রিভিউ পিটিশনও খারিজ করেন । - এদেরই মধ্যরাতের পর ২৮ জানুয়ারি পাঁচঘাতকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
-
ঘাতকের একজন বিদেশে পলাতক অবস্থায় মারা যায় এবং ৬ জন বিদেশে পলাতক
রয়েছে। - এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি ৩৪ বছর পর বাস্তবায়িত হয়।
বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তিতিক্ষায় দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন আদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নেরা সম্প্রদায়িক, ক্ষুদা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ
গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নেরা সম্প্রদায়িক, ক্ষুদা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ
গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি ।
আসুন আমরা জাতির পিতা হারানো শোককে শক্তিতে পরিণত করি। সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর
স্বপ্নের অসম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি ।
স্বপ্নের অসম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি ।
জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার